প্রবন্ধ ১...
কে জানে, রবীন্দ্রসঙ্গীতই বা আর কত দিন
গ্রীষ্মের নিষ্করুণ দাবদাহে দগ্ধ হতে হতে স্বগত উচ্চারণ করি, আগুনের কী গুণ আছে কে জানে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যায়, অস্বস্তি আরও বাড়ে, সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত্রি, অন্ধকার প্রগাঢ়তর, যখন আশা ছেড়ে দিয়েছি, চকিতে বিজুলি আলো চোখেতে লাগাল ধাঁধা। ছেলেটি বুদ্ধিমান, অধ্যাপক পছন্দ করেন, কিন্তু সে ঘোর ছাত্রনেতা, নিয়মিত ক্লাস করার তার ফুরসত কোথায়। হঠাৎ হঠাৎ এক দিন উদয় হলে অধ্যাপক স্মিত হেসে অভিবাদন জ্ঞাপন করেন, মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না। বন্ধু টেলিফোনযোগে নালিশ জানান, অনেক দিন তাঁর খোঁজখবর নিইনি, তা হলে কি তাঁকে ভুলে মেরে দিয়েছি! রঙ্গ ভরে নিজের সাফাই নিবেদন, নিত্য তোমারে চিত্ত ভরিয়া স্মরণ করি।
উদাহরণের সংখ্যা বাড়িয়ে অনেক দূর চলে যাওয়া সম্ভব, কিন্তু তার দরকার কী? আমরা মধ্যবিত্ত সমাজভুক্তরা এটা তো মেনেই নিয়েছি, আমাদের দৈনন্দিন জীবনচর্চার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ মিশে গিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণের পর যে সাত দশক অতিক্রান্ত, এই সময়ের ব্যাপ্তি জুড়ে রবীন্দ্রনাথ এখন আস্তে আস্তে আমাদের বিবর্তমান সংস্কৃতির বহিরঙ্গের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। আলাপচারিতায় রবীন্দ্রনাথ ঢুকে বসে আছেন, আমরা খেয়াল করি না। পারিবারিক শিষ্টাচারের যে অলিখিত লিপি তাতেও তিনি বিরাজ করছেন। বাঙালি মধ্যবিত্ত যেন অনেক উচ্চাবচতা অতিক্রম করে হৃদয়ঙ্গম করেছেন, সমাজকলার যে আদর্শ রবীন্দ্রনাথের দ্বারা অনুপ্রাণিত সৌজন্য কাকে বলে, সৌষ্ঠব কী বস্তু, বচনে কোন প্রান্তে সীমারেখা কোথায় টানতে হয়, প্রতিবেশীর সঙ্গে বিনিময়ে প্রতিবিনিময়ে কী-কী প্রসঙ্গের অনুপ্রবেশ শ্রেয় অথবা বিধেয়, পরিবারভুক্তদের পারস্পরিক সম্পর্কের বিন্যাস কী রকম হলে তা সুচারু, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের সঙ্গে কোন আচরণ শোভন, কোনটা অসহনীয় সব কিছুই যেন ওই মহাপুরুষটি আমাদের জন্য পরম বিচক্ষণতার সঙ্গে নিরূপণ করে গেছেন, আমরা শুধু নির্দেশিকাগুলি পালন করে যাচ্ছি।
উপরের অনুচ্ছেদে যা বলা হল, মধ্যবিত্ত বাঙালি তা গভীর ভাবে বিশ্বাস করেন। সেই বিশ্বাসে স্থিত থেকে তাঁরা যেন মুহুর্মুহু বাইরের পৃথিবীর দিকে আস্ফালন ছুড়ে দিচ্ছেন: দ্যাখো, আমাদের দিকে তাকিয়ে দ্যাখো, আমরা বিশিষ্ট, আমরা অনন্য, আমরা রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করে আছি, আমাদের নিরীক্ষণে তোমাদের অস্তিত্ব সার্থক হোক।
মুশকিল হল, বহিঃসৌষ্ঠবের নিরিখেও অহঙ্কারটি ঠিক ধোপে টেকে না। সোজাসাপটা কথা বলার সময় কি এখনও আসেনি? মানছি রবীন্দ্রনাথের গান গত পঞ্চাশ বছরে সচ্ছল বাঙালি ঘরে ঘরে অপরিহার্য আসবাব। তাঁর প্রয়াণের মুহূর্তেও যে গান শান্তিনিকেতনের নিভৃত প্রাঙ্গণ ডিঙিয়ে নাগরিক একটি অতিসঙ্গীর্ণ অতিসম্ভ্রান্ত সমাজগোষ্ঠী পর্যন্ত বড়-জোর পৌঁছেছিল তা হঠাৎ বিস্ফোরণের মতো ছড়িয়ে পড়ল। অস্বীকার করে লাভ নেই, এটা মুখ্যত ঘটেছিল শুধু নতুন নতুন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষালয় কলকাতায় গড়ে উঠেছিল বলেই নয়, প্রথম পর্যায়ে পঙ্কজকুমার মল্লিক এবং পরে দেবব্রত বিশ্বাস ও সুচিত্রা মিত্রের মতো বৌদ্ধিক তথা আশ্চর্য কণ্ঠসৌষ্ঠব-সম্পন্ন গায়ক গায়িকাদের তিতিক্ষা ও অধ্যাবসায় হেতু। রবীন্দ্রসঙ্গীত এখন আমাদের কাছে পরিচিত অভ্যাসের মতো। দৈনিক পত্রিকা না থাকলে দিনটাকে যেমন বাসী মনে হয়, রবীন্দ্রসঙ্গীত বিহনেও আমাদের অবস্থা যেন তথৈবচ। পদ্মা পেরিয়ে বাংলাদেশে অবশ্য এই সংক্রমণ আরও মারাত্মক। জনৈক বাংলাদেশীয় অর্থনীতিবিদের কথা জানি, তিনি মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন শহরের কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, পটোমাক নদী পেরিয়ে ভার্জিনিয়া রাজ্যের একটি নির্জন পল্লিতে শৌখিন প্রাসাদ বানিয়েছেন। সব মিলিয়ে পনেরো ষোলোটি বড়-ছোট ঘর। প্রতিটি ঘরে বৈদুতিন ব্যবস্থার কেরামতিতে অহোরাত্র একটির পর আর একটি অবিশ্রান্ত রবীন্দ্রনাথের গান।
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক বৃত্তান্ত আপাতত না-হয় পাশে সরিয়ে রাখা যাক। নিজের ঘরের প্রসঙ্গেই ফিরি, যা চট করে আমরা মনে রাখি না। রবীন্দ্রনাথ আমাদের জন্য যে পুঞ্জিত ঐশ্বর্যসামগ্রী রেখে গেছেন তাদের মধ্যে সর্বপ্রধান অবশ্যই আমাদের ভাষা। মানতে অসুবিধা কোথায়, উনিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলা ভাষা প্রায় মধ্যযুগে অবস্থান করছিল। একটি সরল, নিরেট, অনাড়ম্বর চৌহদ্দিতে আবদ্ধ, অচল-হয়ে-যাওয়া পালি থেকে ধারধোর করে সেই ভাষা বেঁচে ছিল। তাতে সামান্য কিছু আরবি, ফারসি এবং একটা দুটো ইউরোপীয় ভাষার ছুটকো-ছাটকা শব্দের প্রলেপ। পাদ্রিসাহেবরা ছাপাখানার সাহায্য নিয়ে সেই ভাষার একটি আধুনিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালালেন, কিন্তু কেমন আড়ষ্ট আড়ষ্ট শোনাল। বিদ্যাসাগর, তর্কালঙ্কার মহাশয়, বঙ্কিমচন্দ্র, অক্ষয়কুমার দত্ত অনেকটা সিজিল-মিছিল করলেন, কিন্তু তা করতে গিয়েও সংস্কৃতের ভূত ঠিক ছাড়াতে পারছিলেন না। এই অবস্থায় রবীন্দ্রনাথের প্রবেশ ঘটল। প্রধানত তাঁর পঁয়ষট্টি-বছর-জোড়া সাধনার ফলে বাংলা ভাষা একটি উজ্জ্বল ঝকঝকে ভাষায় রূপান্তরিত হল। সত্যিই একটি আধুনিক ভাষা, যে-ভাষা নিয়ে আর আমাদের জড়তাবোধের কোনও কারণ নেই। সমাজ ক্রমশ জ্ঞানান্বিত হচ্ছে। শিক্ষিত বাঙালির চিন্তাচেতনা ক্রমশ ব্যাপ্ততর ও গভীরতর। মাতৃভাষার মধ্যবর্তিতায় ভাবনা-অনুভাবনা নিজেদের ভাষায় প্রকাশ করার জন্য যথাযথ শব্দগুচ্ছ অন্যত্র হাতড়াবার আর প্রয়োজন রইল না। এটাও যেন মস্ত এক স্বাধীনতালাভের অনুভূতি। যা বলতে চাইছি, তা নিজের ভাষায় বলতে পারছি। আমরা এখন দ্বিধা-লজ্জা মুক্ত হয়ে মাতৃভাষা নিয়ে উচ্ছ্বাস বোধ করতে পারি। রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের পরবর্তী এই সত্তর-একাত্তর বছরে বাংলা সাহিত্যের ভাষা পুরোপুরি অপরিবর্তিত থেকে গেছে। তিনি যে ভাষায় ‘ল্যাবরেটরি’ বা ‘রবিবার’ গল্প রচনা করেছিলেন, সেই ভাষাই এখনকার লেখকরা ব্যবহার করে যাচ্ছেন। হয়তো গদ্যরীতির আদল ঈষৎ এ-দিক ও-দিক হেলেছে, নতুন নতুন শব্দের ঝাঁক বাসা বেঁধেছে, কিন্তু মূল অবয়বটি অপরিবর্তিত। রবীন্দ্রনাথ আমাদের ভাষা দিয়েছেন এই উক্তি তাই আদৌ বাড়িয়ে বলা নয়।
এখানেই সমস্যা, সংস্কৃতির বিকাশ তো অনেকটাই ভাষাকে অবলম্বন করে। অথচ মধ্যবিত্ত বাঙালি অতি দ্রুত রবীন্দ্রদত্ত ভাষা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বায়নের পাঠ্যক্রমের জন্যই হোক, অন্য কোনও হিসেবের ফেরে পড়েই হোক, মাতৃভাষা সম্পর্কে এক গভীর হীনম্মন্যতা-বোধ সমাজপতিদের আচ্ছন্ন করে আসছে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে আমরা হয়তো একাত্ম হতে চাইছি, নতুন একটি আদর্শের বাণী আবেগকে উথালপাথাল করছে। পৃথিবী জুড়ে এক-ভাষা-এক-প্রাণ-একতা। রবীন্দ্রসঙ্গীতের ক্যাসেট যে বাড়িতে ডাঁই হয়ে জমছে, সেই সচ্ছল মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরাই হাজার চেষ্টাতেও একটি আস্ত বাংলা বাক্য উচ্চারণ করতে অসমর্থ।
এক দিকে বাহ্যত রবীন্দ্রনাথের গানের চাহিদা যদিও বেড়েছে, কিন্তু তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলি সম্ভবত প্রথা হিসাবে এখনও কেনাকাটা হয়, ক’জন আর মন দিয়ে সে সব কাব্য পাঠ করেন, যাঁদের কাব্যপ্রীতি নিবিড়, তাঁরাও বোধহয় রবীন্দ্রনাথকে পাশে সরিয়ে রেখে ঢাউস বনে যাওয়া কণিকা পত্রিকার সর্বশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত উঠতি কবিদের রচনা বেছে নেবেন। ‘গল্পগুচ্ছ’ থেকে শুরু করে ‘নৌকাডুবি’, ‘চোখের বালি’, ‘গোরা’ পর্যন্ত একই হাল। পরিস্থতি আরও একটু শোচনীয়, পাঠ্যসূচিতে না-থাকলে রবীন্দ্রনাথের অতি প্রাঞ্জল অথচ চিন্তামণ্ডিত প্রবন্ধের ভাণ্ডার একমাত্র গবেষকদের জন্যই, যেন তাদের আর কোনও উপযোগিতা নেই।
হয়তো রবীন্দ্রসঙ্গীতও তেমন বেশি দিন আর টিকে থাকবে না, টেলিভিশন একটু একটু করে সাংস্কৃতিক রুচি নির্ধারণের মুখ্য আসনটি দখল করে নিচ্ছে, নববর্ষ উপলক্ষে সম্প্রতি যে সব অনুষ্ঠান দৃষ্টি- ও কর্ণগোচর হল, রবীন্দ্রসংগীত সত্যিই অপস্রিয়মাণ।
সদ্য-সমাপ্ত বছরটি অবশ্য একটি বিশেষ অর্থে অ-সাধারণ! রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষ জন্মতিথি উদ্যাপন উপলক্ষে সরকারি ও নানা বেসরকারি মহল থেকে দানসত্র খোলা হয়েছিল: এসো পুরবাসী লুটেপুটে নাও। পরিচিত রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞদের নিশ্বাস ফেলার সময় নেই, তাঁরা বিমানযোগে, স্থলপথে, জলপথে ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছেন। নানা নামে আলোচনাসভা। যে কোনও বিষয় নিয়ে, এক বার রবীন্দ্রনাথের বুড়ি ছুঁয়ে গেলেই হল। গবেষণা করতে চাইলেও রেস্তর অভাব হবে না। অনেকানেক গায়ক-গায়িকা, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের, নট-নটীদের অনেক বাড়তি সুযোগসুবিধা মিলেছে। কিন্তু বৎসারান্তে যদি হিসেব কষা যায়, আমরা কী পেলাম? রবীন্দ্রনাথ কখনও কলকাতার ঘোড়দৌড়ের মাঠে গিয়ে বাজি ধরেছিলেন কি না, তিনি কোনও পার্বণ উপলক্ষে সিদ্ধি সেবন করেছিলেন কি না, অথবা তাঁর কন্যাদের বিবাহে তিনি থোক কত টাকা পণ হিসাবে দিয়েছিলেন, এ সব নিয়ে ফাটাফাটি চর্চা করে ফালতু জ্ঞানের পরিধি হয়তো সামান্য বাড়বে, কিন্তু সমগ্র মানুষটিকে বুঝতে তা আমাদের কতটুকু সাহায্য করবে? রবীন্দ্রনাথ আসলে এখন অছিলায় পরিণত।
শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হয়, সাংস্কৃতিক বহিরঙ্গেও রবীন্দ্রনাথ নিছক নাম-কা-ওয়াস্তে হয়ে আছেন, প্রায় সমস্তটাই ভড়ং। ফুটবল খেলার মাঠে যে অন্যমনস্ক অবহেলার সঙ্গে গুলতানির মুহূর্তে খেলোয়াড় মহোদয় বলটিতে পদাঘাত করেন, আমরাও সাংস্কৃতিক অহংবোধের আড়ালে রবীন্দ্রনাথের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছি, রবীন্দ্রনাথ আক্রান্ত।
একটি সম্পর্কিত প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ইতি টানব। গৌরকিশোর ঘোষ তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছে গল্প করতেন, খুলনা বা যশোহর শহরে কিশোর বয়সে এক ঘোর স্বদেশি নেতার মোহজালে আটকা পড়েছিলেন। নেতা মহোদয় তাঁর শিষ্যসামন্তদের চরিত্র ও শরীর গঠনের মহান উদ্দেশ্যে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসের ঠা ঠা রোদ্দুরে তাদের রুট মার্চ শেখাতেন একটি বিশেষ রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, ভেঁপু ফুলিয়ে ঝাঁঝালো সামরিক তাল সহযোগে, ‘অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দমধুর হাওয়া...’ আজও দেখেশুনে মনে হয়, সেই খেয়ালি নেতার অশান্ত পরমাত্মা আজও ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে। আমাদের রবীন্দ্রচর্চা এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে রাস্তা অবরোধ করে বিনা অনুমতিতে সভা করার অপরাধে বাচ্চা ছেলেমেয়েদের লাঠির বাড়ি বন্দুকের কুঁদো মেরে পুলিশ-ভ্যানে তোলা হয়েছে, গাড়ি আলিপুর সংশোধানাগারের দিকে ক্ষিপ্রবেগে ধাবমান, আর ভ্যানের ছাদে সাঁটা মাইক্রোফোন থেকে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠনিঃসৃত আকুতি: নিত্য তোমার যে ফুল ফোটে ফুলবনে তারি মধু কেন মন মধুপে খাওয়াও না...।
রবীন্দ্রনাথ সত্যিই পালাবার পথ পাচ্ছেন না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.