ঘরের ছেলে রিচার্ড লোইতাম হত্যার তদন্তে নামল ইম্ফল পুলিশও। পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলটি বেঙ্গালুরুতে নিজেদের মতো করে তদন্ত শুরু করেছে। গত কালই বেঙ্গালুরু গিয়ে ফরেনসিক অফিসার ও ঘটনার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে দেখা করেছেন ইম্ফল পুলিশদলের প্রধান, এসপি পটসাংবাম ধনকুমার। ১৮ এপ্রিল নিজের ছাত্রাবাসের বিছানায় রিচার্ড লোইতামের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় পুলিশ প্রথমে ঘটনাটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হিসেবে নথিবদ্ধ করলেও, দেশজুড়ে আন্দোলনের চাপে নতুন করে হত্যার তদন্ত শুরু করা হয়। ঘটনার আগের রাতে আইপিএল দেখা নিয়ে বিবাদে যে দুই ছাত্র রিচার্ডের মাথায় আঘাত করেছিল তাদেরও আটক করা হয়েছে। মণিপুর পুলিশকে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, ফরেনসিক রিপোর্ট ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনও আসেনি। ধনকুমাররা ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন। রিচার্ডের কলেজ, আর্চায এনআরভি ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজির ছাত্র-শিক্ষকদের ভাষ্যও লিপিবদ্ধ করা হয়।
ছাত্রাবাসে ‘এ’ ব্লকে, ২২৫ নম্বর ঘরে, যেখানে রিচার্ডের দেহ মেলে সেই ঘরটিও পরীক্ষা করে মণিপুর পুলিশ। কথা বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও রুমমেটদের সঙ্গে। তবে মণিপুর পুলিশ সূত্রে খবর, রিচার্ডের দুই রুমমেটের বয়ান দু’রকম। সৌরভ নামে এক রুমমেটের বক্তব্য, সে কলেজ থেকে ফিরে বেলা দেড়টা নাগাদ রিচার্ডকে মৃত অবস্থায় দেখেছে। তবে ওই ঘরে থাকা অন্য এক ছাত্র সুধাকর জানায় সৌরভ দেড়টা অবধি ঘরেই ছিল। ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন জানান, মার খেয়ে ফিরে রিচার্ড ল্যাপটপে সিনেমা দেখছিল। রিচার্ডের মৃত্যুর খবর ১৮ এপ্রিল বাড়িতে জানানোও হয়নি। মণিপুর পুলিশ জানতে পেরেছে ঘটনাটি ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্থানীয় থানায় নথিভুক্ত হয়। অথচ পুলিশ ১৯ এপ্রিল অবধি ঘটনাস্থলেই আসেনি। ঘরটি সিল করা হয় ২০ এপ্রিল। ঘর ও বিছানার ছবি তোলা হয়নি। রির্চাডের ল্যাপটপ পরীক্ষা করা হয়নি। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদেরও ডাকা হয় ঘটনার চার দিন পরে। বেঙ্গালুরু (গ্রামীণ)-এসপি ডি প্রকাশ অবশ্য তাঁদের তরফে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্য দিকে, প্রেমিকার সামনে গলায় তার পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করা মণিপুরি যুবক হাইস্নাম জাইকোর বাবা-মা প্রেমিকা সেরাফিনাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ঘটনার জন্য মেয়েটি দায়ী নন। দোষ তাঁদের ছেলের। প্রেমিকা তিন দিন ফোন না ধরায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাইকো তাকে ঘরে ডেকে পাঠিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। পরে প্রেমিকার সামনেই গলায় টেলিফোনের তার পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে সে। মারা যায় হাসপাতালে। গত কাল তাঁর কাকা জয়চন্দ্র জ্যাকব মৃতদেহ নিতে বেঙ্গালুরু পৌঁছন। তিনি জাইকোর বাবা-মার লেখা চিঠি পুলিশের হাতে তুলে দেন। সেখানে ঘটনার জন্য কাউকে দায়ী না করার কথা বলা হয়েছে। সেরাফিনার সঙ্গে জাইকোর বাবা-মা ফোনেও কথা বলেন। |