শেষ অবধি ‘লিঙ্গ পরিবর্তনে’ অসমের বিধান বরুয়ার পক্ষেই রায় দিল বম্বে হাইকোর্ট। আজ লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত মামলার শুনানির পরে গুয়াহাটির ছেলে বিধান বরুয়ার পক্ষে রায় দিয়ে আদালত বলে, ‘‘বিধান সাবালক। এমন কোনও আইন নেই যা তাঁকে লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত অস্ত্রোপচার থেকে রুখতে পারে।’’ বিধানের বাবা অস্ত্রোপচারের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ক্রমাগত ছেলেকে হুমকি দিচ্ছেন বলে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিধানের আইনজীবী এজাজ আব্বাস নকভি। আদালত বলে, ‘‘এমন কোনও হুমকি এলে বিধান, কোলাবা থানা বা মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাক। পুলিশ আইন মেনে ব্যবস্থা নেবে।’’
গুয়াহাটির ছেলে বিধান নিজেকে স্বাতী বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। ছোট থেকেই প্রকৃতিগত ভাবে তিনি নিজেকে মেয়ে বলেই মনে করতেন। নিজের জমানো টাকা দিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করলেও বিধানের বাবা-মা ‘সামাজিক লজ্জার আতঙ্ক’-এ বিধানের প্রস্তাব উড়িয়ে দেন। এরপরেই পরিবার বনাম বিধানের লড়াই শুরু। ইতিমধ্যে বিধান বিমান বাহিনীর এক ফ্লাইট লেফটেন্যান্টের প্রেমে পড়েন। বিধান পালিয়ে গিয়ে মুম্বইয়ের সইফি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করাবার চেষ্টা করেছিল। বাবা সুপ্তিরঞ্জন বরুয়া জানতে পেরে হাসপাতালে পৌঁছে যান। বানচাল হয় অস্ত্রোপচারের চেষ্টা। ক্ষিপ্ত ছেলে এরপর বাবার বিরুদ্ধেই বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবি, ‘‘তাঁকে ও তাঁর প্রেমিককে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বাবা। আলফাকে দিয়ে অপহরণ করানোর হুমকিও দিচ্ছেন। হাসপাতালের চিকিৎসককেও শাসানো হচ্ছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন।’’
বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মোহিত শাহ্ ও বিচারপতি এন এম মজুমদার মামলাটি বিচারপতি এস এফ ভাজিফদার ও এ আর যোশির এজলাসে পাঠান। তাঁরা শুনানি পিছিয়ে ৭ মে করায় বিধান আত্মহত্যার হুমকি দেয়। হাইকোর্ট সাফ জানায়, আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে আদালতের উপরে চাপ সৃষ্টি করা চলবে না। আজ মামলাটির শুনানি হয়। সেখানে বিধানের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে দেশের বিচারব্যবস্থা। তবে বিধানের বাবা, রেলকর্মী সুপ্তিবাবু অবশ্য এই ঘটনাকে কোনও ভাবেই মেনে নিতে নারাজ। তিনি বলেন, “আদালত কী ভাবে শুনানির পরেই রায় দিয়ে দেয়? পুরো ব্যাপারটাই চক্রান্ত। আমরা যতদূর লড়ার লড়ব। বাড়িতে কান্নার রোল উঠেছে। সংবাদমাধ্যম ও আদালতকে একটি চক্র প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।” |