ঢাকুরিয়ায় আমরি হাসপাতালের বেসমেন্টে আগুন লেগেছিল ৮ ডিসেম্বর শেষ রাতে। সোমবার রাতে আগুন লাগল চাঁদনি চক বাজারের একটি বাণিজ্যিক ভবনের বেসমেন্টে। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় ফিরে আসে সেই আতঙ্ক। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন গভীর রাত পর্যন্ত আগুনের সঙ্গে লড়াই চালায়। ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এক দমকলকর্মী। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর।
দমকল সূত্রের খবর, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ‘বিমলা চক’ নামে একটি চারতলা বাণিজ্যিক ভবনের বেসমেন্টে আগুন লাগে। বাজারের সব দোকানই তখন বন্ধ। এলাকার লোকজন ধোঁয়া দেখতে পেয়ে দমকলে খবর দেন। আমরির বেসমেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষত এখনও দগদগে। তাই রাতের আগুনে পুরো চাঁদনি চক এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘুম ভেঙে এলাকার বাসিন্দা এবং ফুটপাথবাসীরা ভিড় করেন জ্বলন্ত বাড়ির কাছে। পুরো বাড়িতেই বৈদ্যুতিন সাজসরঞ্জামের দোকান। দমকলের বক্তব্য, বাড়িটিকে দাহ্য পদার্থের বিশাল গুদাম বললেই হয়। বেসমেন্টও ঠাসা ছিল প্লাস্টিক, ব্যাটারি, বিদ্যুতের তার-সহ নানা ধরনের দাহ্য সামগ্রীতে। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। গলগলিয়ে বেরোতে থাকে ধোঁয়া। আমরির বেসমেন্টও বিভিন্ন দাহ্য পদার্থে ঠাসা ছিল বলে অভিযোগ। চাঁদনি চকের বাড়িটিতে বিপজ্জনক ভাবে ওয়্যারিংয়ের তারও ঝুলছে। অথচ আগুনের সঙ্গে লড়াই করার মতো কোনও ব্যবস্থাই ছিল না বলে দমকলের অভিযোগ। যে-সব দোকানে আগুন ছড়িয়েছিল, সেগুলির শাটার ছিল বন্ধ। চাবি না-পেয়ে দমকল দীর্ঘ ক্ষণ কাজে নামতে পারেনি। বাতাস চলাচলের ঘুলঘুলি দিয়ে বেসমেন্টের ভিতরে জল দেওয়া শুরু হয়। বন্ধ শাটার কোনও মতে সামান্য ফাঁক করে জলের পাইপ ঢুকিয়ে জল দেওয়ারও চেষ্টা চলে। আগুন যাতে ওই বাড়ির উপরের তলায় এবং পাশের বাড়ির দোকানে ছড়াতে না-পারে, সেই জন্য গ্যাস-মুখোশ পরে জল ও ফোম নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন দমকলকর্মীরা। বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ আসতে দেরি করে বলে অভিযোগ। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়।
আগুন লাগার এক ঘণ্টারও বেশি সময় পরে বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ এলে আগুন নেভানোর কাজ পুরোদমে শুরু করেন দমকলকর্মীরা। রাত পৌনে ১টা নাগাদ আগুন আয়ত্তে আসে। দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে জানান, ওই ভবনে অগ্নিবিধি মানা হচ্ছিল কি না, দমকল তা যাচাই করছে। তিনি বলেন, “পুরনো কলকাতার গঠন এমনই যে, পুরোপুরি সব ঢেলে না-সাজলে আগুনের বিপদ কমানো মুশকিল। আমরা সতর্ক করে দিতে পারি মাত্র। করছিও। তা সত্ত্বেও বিধি না-মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।” |