প্রত্যর্পণ চুক্তি শীঘ্রই
তিস্তা চুক্তি নিয়ে নয়াদিল্লির উপরে চাপ বাড়াচ্ছে ঢাকা
তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি দ্রুত সম্পাদন করার জন্য ভারতের উপর নতুন উদ্যমে চাপ তৈরির কাজ শুরু করল বাংলাদেশ।
আজ দু’দেশের মধ্যে যৌথ উপদেষ্টা কমিশনের প্রথম বৈঠকে তিস্তার প্রসঙ্গ জোরালো ভাবে তোলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি। সব থেকে বড় কথা, এ দিন প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতেও তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি প্রসঙ্গ রাখা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব তিস্তা চুক্তি সম্পাদনে দায়বদ্ধ দুই দেশই। সেই সঙ্গে ছিটমহল হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তিও যাতে ভারত দ্রুত অনুমোদন করিয়ে নেয়, তা নিয়েও বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণকে অনুরোধ করেন দীপু মণি। কাল কেন্দ্রীয় জলসম্পদমন্ত্রী পবন বনশলের সঙ্গে আলোচনায়ও জলবণ্টনের বিষয়টি উঠবে বলে খবর।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দু’দেশের মধ্যে শীঘ্রই বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি হবে বলেও যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এই বিষয়ে কথাবার্তা চললেও চুক্তি যে নিশ্চিত ভাবেই হতে চলেছে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত এই প্রথম মিলল। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনও দেশই তাদের মাটি দেশি বা বিদেশি জঙ্গিকে অপরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না।
নয়াদিল্লির বৈঠকে এস এম কৃষ্ণর সঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি। ছবি: পি টি আই।
গত কালই ঢাকা সফরে বাংলাদেশের জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সেই সিদ্ধান্তগুলির যে ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে, সে কথা আজ স্বীকারও করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। কিন্তু তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিটিই যে বাংলাদেশের ‘মূল বিষয়’, সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় নেতৃত্বকে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অথবা প্রণববাবুর কাছে ঢাকা স্পষ্ট করে দিয়েছে, তিস্তার জলের বিষয়টি সরাসরি বাংলাদেশের মানুষের আবেগের সঙ্গে যুক্ত। বিরোধী বিএনপি-জামাত গোষ্ঠী মিলে এখন হাসিনা-বিরোধী প্রচারে বলছে, এত দিনেও তিনি তিস্তা নিয়ে ভারতের কাছ থেকে কিছু আদায় করতে পারেননি। উল্টে ভারতের কাছে দেশের স্বার্থ বেচে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী নির্বাচনে ভাল ফল করতে হলে তিস্তা চুক্তি করাটা হাসিনা তথা আওয়ামি লিগের কাছে খুবই প্রয়োজন।
ভারতীয় নেতৃত্বও অবস্থাটা বোঝেন। তাঁরা বারবার হাসিনা সরকারকে বোঝাতে চেষ্টা করছেন যে, আন্তর্জাতিক চুক্তি কেন্দ্রের এক্তিয়ারে পড়লেও ভারতের বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার ফলে তাঁদের হাত-পা কিছুটা বাঁধা। ‘সংশ্লিষ্ট সকলের মত’ নিয়েই এ ব্যাপারে এগোতে হবে নয়াদিল্লিকে। সেই সময়টুকু যেন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা হয়। গত কাল হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে প্রণববাবু যা বলেছিলেন, আজ দীপু মণির কাছেও কার্যত সে কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন কৃষ্ণ। জানিয়েছেন, ভারত এ ব্যাপারে সচেষ্ট, তবে ঐকমত্য তৈরি করতে সময় লাগছে। তাঁর কথায়, “২০০৯ সাল থেকেই তিস্তা নিয়ে কথা চলছে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করার। যারা এর সঙ্গে যুক্ত, তাদের সবারই মত নিতে হবে। তবে আমরা চাইছি যাতে দ্রুত চুক্তিটি সম্পন্ন হয়।”
আজ দু’দেশের মধ্যে যে যৌথ কমিশনের আলোচনা হল, তার পরিকল্পনা গত সেপ্টেম্বরেই হয়েছিল। সে সময় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বাংলাদেশ সফরে গিয়ে উন্নয়নের জন্য সহযোগিতার যে চুক্তি সই করেন, এই বৈঠক তারই অন্যতম অঙ্গ। শক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে আরও বেশি দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে দীপু মণিকে। বৈঠকের পর কৃষ্ণ বলেন, “আশা করছি, ২০১৩ সালের গ্রীষ্মের মধ্যেই ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পাঠাতে পারব। ২০১৬ সালের মধ্যে যৌথ উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদুৎ প্রকল্প চালু করার পথেও এগোচ্ছি আমরা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.