তাঁর টানা তিন বারের জেতা ৩০ নম্বর ওয়ার্ড এ বার তফসিলি সংরক্ষিত। ‘ঠাইহারা’ তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়াল শেষ পর্যন্ত দাঁড়াতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছিলই। ‘খবর’ ছিল, এ বার বিশ্বনাথবাবুকে আর প্রার্থী করছে না তৃণমূল। সোমবার, মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন দুর্গাপুর মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেও দেন, “উচ্চতর নেতৃত্বই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
কিন্তু হঠাৎই দুপুর ১টা নাগাদ গিয়ে উদয় বিশ্বনাথবাবু। সঙ্গে বিশ্বস্ত অনুগামীরা। তাঁরাও নেতার সঙ্গে ভিতরে যেতে চাওয়ায় এসিপি কাজি সামসুদ্দিনের সঙ্গে বচসাও বেধে যায়। শেষমেশ অবশ্য সকলকে শান্ত করে বিশ্বনাথবাবু মনোনয়নপত্র জমা দেন। |
এ দিন সকাল থেকেই কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি, সিপিআইএম, জনতা দল (ইউনাইটেড) ও নির্দল প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে চত্ত্বর জুড়ে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। সন্ধ্যা পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলে।
নির্বাচনী দফতরের হিসাব অনুযায়ী পুরসভার মোট ৪৩টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস ৫১, বামফ্রন্ট ৪৫, তৃণমূল ৪৭, বিজেপি ৩৬, জনতা দল (ইউনাইটেড) ও নির্দল মিলে মোট ১৬জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। তার মধ্যে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে কংগ্রেস ৫১, তৃণমূল ২৭, বিজেপি ৯, সিপিএম ১ এবং জনতা দল (ইউনাইটেড) ও নির্দল ১৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। এ দিন সকাল থেকেই মহকুমাশাসকের কার্যালয় চত্বর জুড়ে ছিল পুলিশি তৎপরতা।
শনিবার মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন তৃণমূলের সাম্ভাব্য মেয়র পদে প্রার্থী বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। সোমবারও দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র দাখিলের সময়ে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন তিনি। |
ওয়ার্ড সংখ্যার থেকে অতিরিক্ত প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই। ব্যাখ্যা হিসাবে দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, মনোনয়ন পত্রে কোনও ত্রুটির কারণে যাতে তা বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেও ওয়ার্ড প্রার্থীশূন্য না হয়ে যায়, তার জন্যই এই সতর্কতা। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা এ বারের পুরভোটের প্রার্থী বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী জানান, তাঁদের হয়ে অতিরিক্ত দু’জন মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তৃণমূলের অতিরিক্ত মনোনয়ন জমা পড়েছে ৪টি। কংগ্রেসের মনোনয়ন জমা পড়েছে মোট ৫১টি। তৃণমূলের সঙ্গে দর কষাকষিতে পুরসভার এক তৃতীয়াংশেরও কম আসন পাওয়ার দাবি জানাচ্ছিল কংগ্রেস। সেখানে এতগুলি মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রসঙ্গে দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি সুদেব রায় বলেন, “মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অতিরিক্ত কিছু মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়। তবে সংখ্যাটা এত বেশি কি করে হল খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
|
মনোনয়ন জমা দিলেন প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ পাড়িয়ালেরা। নিজস্ব চিত্র। |