চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে খড়্গপুরে ট্রমা সেন্টার চালু হতে চলেছে। শনিবার মেদিনীপুরে এসে এমনটাই জানালেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন সৎপতি। তিনি জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর অভাবে ট্রমা সেন্টার চালু করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে মেডিক্যালে অফিসারও প্রয়োজন। রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে। জুন মাসের মধ্যেই সেন্টারটি চালু করার চেষ্টা চলছে।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসে ওই কমিটি। স্বাস্থ্য অধিকর্তার পাশাপাশি পরিদর্শক দলে ছিলেন কমিটির অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। দুপুরবেলা বৈঠকে হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার ফাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে জেলার কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা সেরে নেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। খড়্গপুরের ট্রমা সেন্টার নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন। ট্রমা সেন্টারের কাজ কতদূর এগিয়েছে, আর কী কী প্রয়োজনসেই সব সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “কর্মীর পাশাপাশি আরও কিছু মেশিনপত্র প্রয়োজন ট্রমা সেন্টারে। ওই সব মেশিনপত্র চলে এলেই সেন্টারটি চালু করা হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত হয় বেশ কয়েক বছর আগেই। অর্থ বরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় ৩ বছর আগে নতুন ভবন তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু, প্রয়োজনীয় সব মেশিনপত্র না-আসায় এখনও এই সেন্টার চালু করা সম্ভব হয়নি। ট্রমা সেন্টারে আইসিইউ, সিটি স্ক্যান, ইসিজি, উন্নত এক্স-রে মেশিন থাকার কথা। |
এই কারণের জন্য সাধারণ সার্জেন, অর্থোপেডিক সার্জেন, অ্যানাস্থেটিস্ট, সাধারণ মেডিক্যাল অফিসার, নার্স, টেকনিশিয়ান, ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত অবশ্য ১ জন সার্জেন ও ১ জন অ্যানাস্থেটিস্ট নিয়োগ হয়েছে। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, “সেন্টারটি চালু করতে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে।” এ দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামোগত ঘাটতি নিয়েও আলাপ-আলোচনা হয় বৈঠকে। হাসপাতালে কতগুলি শয্যা রয়েছে, কত জন ভর্তি থাকেন, প্রতিদিন কতজন বহির্বিভাগে আসেনইত্যাদি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার পাশপাশি পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও কী কী প্রয়োজন, সেই সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের মতামত নেয় পরিদর্শক দল। বৈঠকে উপস্থিত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধধন বটব্যাল বলেন, “যে পরিকাঠামো রয়েছে, তার মধ্যে থেকেই ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।” বৈঠক শেষে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। সদ্যোজাত শিশুদের জন্য এখানে একটি সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) তৈরির কাজ চলছে। গত ফেব্রুয়ারিতেই এই ইউনিটটি চালু হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সেই মতো কাজ হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এসএনসিইউ-এর বেশ কিছু সরঞ্জাম এখনও এসে পৌঁছয়নি। তাই এই পরিস্থিতি। এখানে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট রয়েছে। যেখানে অন্তত ৬ জন শিশু ভর্তি থাকে। যাঁদের শারীরিক অবস্থা অন্যদের তুলনায় খারাপ। এসএনসিইউ চালু হলে আরও অন্তত ১২ জন শিশুকে ‘বিশেষ’ দেখভালে রাখা যাবে। নতুন এই ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে এখানে এমন আরও ১৩টি শয্যা থাকবে যেখানে অপেক্ষাকৃত কম ‘সঙ্কটজনক’ শিশুদের চিকিৎসা চলবে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “এসএনসিইউয়ের জন্য নাসির্ং স্টাফ পোস্টিং হয়েছে। এ বার চিকিৎসকও আসবেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউনিটটি চালু করার চেষ্টা চলছে।” |