বাড়িতেই খুন দম্পতি, ধন্দে পুলিশ
নিজের বাড়িতেই নৃশংস ভাবে খুন হলেন এক ব্যবসায়ী দম্পতি। পুরুলিয়া শহরের নীলকুঠিডাঙ্গা এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতেরা হলেন রামশঙ্কর কোঠারি (৬৪) ও তাঁর স্ত্রী সুশীলা কোঠারি (৫০)। পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মাঝে কোনও এক সময়ে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে রবিবার সকালে এলাকায় যান জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুধীর কুমার, ডিএসপি(শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে খুনের ধরন দেখে মনে হচ্ছে কোনও পরিচিত লোকই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।”
এ দিন সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ওই দম্পতির শোবার ঘরে তখনও টিভি চলছে। চালানো রয়েছে এসিও। টিভির রিমোর্ট বিছানার উপরে। মেঝেতে পড়ে রয়েছে সুশীলাদেবীর দেহ, আর বিছানার উপরে পড়ে রয়েছে রামশঙ্করবাবুর দেহ। তাঁর শরীর সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা। দু’জনেরই গলার নলি কাটা এবং দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। পরনের কাপড় রক্তে মাখামাখি, মেঝে জুড়ে ও বিছানায় রক্তের দাগ। পাশের সোফায় পড়ে রয়েছে রক্তমাখা ছুরি। তখনও রান্না ঘরের আলো জ্বলছিল।
তদন্তে পুলিশ, বাইরে জনতা। ছবি: সুজিত মাহাতো।
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, রামশঙ্করবাবুর বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য একটি দরজা ভিতর থেকে বন্ধ খাকলেও সদর দরজা খোলা ছিল। রান্নাঘরের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে তাঁদের রাতের খাওয়া শেষ হয়নি। কিন্তু তদন্তে রবিবার রাত পর্যন্ত কোনও সূত্র মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। দেহ দু’টি ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া শহরের মধ্যবাজার এলাকায় রামশঙ্করবাবুর গয়নার ব্যবসা রয়েছে। চার ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে অমিতের লজেন্সের ব্যবসা আছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শহরের অন্যত্র নিজের পরিবার নিয়ে থাকেন। আর ছোট ছেলে সুনীল কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাঁদের একজন কলকাতায় ও অন্যজন দিল্লিতে থাকেন। আর প্রৌঢ় দম্পতি নীলকুঠিডাঙ্গার বাড়িতেই থাকতেন। অবাঙালি এই প্রৌঢ় দম্পতি একাই থাকতেন বলে তাঁর বাড়িতে খুব একটা যাতায়াত ছিল না পড়শিদেরও। স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ কেজরিওয়াল বলেন, “রামশঙ্করবাবুর ছোটছেলে সুশীল আমার বন্ধু। রবিবার সকালে সে আমাকে ফোনে জানায়, বাবা-মা কেউ ফোন তুলছেন না। কী হয়েছে একটু দেখতে বলে। এলাকার কাউন্সিলর আমার পরিচিত। আমি তখন তাঁকে বিষয়টি জানাই।”
কাউন্সিলর প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সন্দীপের কাছ থেকে ঘটনা শুনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এর পরেই পুলিশ রামশঙ্করবাবুর বাড়িতে গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করে।” ততক্ষনে খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন বড় ছেলে অমিতও। তিনি বলেন, “আমি সকালে বাজারে যাচ্ছিলাম। তখন কলকাতা থেকে বড়দির ফোন পাই। ফোনে বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে দিদি জানায়। শুনেই গিয়ে দেখি সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। কারা এই নৃশংস করল কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।” রামশঙ্করবাবুর এক সম্পর্কিত নাতি রাজেশ মল বলেন, “শনিবার বিকেলেও আমি দাদুকে দোকানে দেখেছি। প্রতিদিনের মতই দিদা তাঁর জন্য টিফিন নিয়ে এসেছিলেন। প্রায় দিনই দোকান একটু তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দু’জনেই একসঙ্গে বাড়ি ফিরে যান।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.