অলিম্পিকের আগে লন্ডনে বিশ্বকাপে অংশ নিতে গিয়ে নজিরবিহীন হেনস্থার মুখে পড়লেন গগন নারাং, জয়দীপ কর্মকারদের মতো এক ঝাঁক নামী ভারতীয় শুটার।
শনিবার জনা পঁচিশ ভারতীয় শুটারকে মধ্য লন্ডনের এক পাঁচতারা হোটেল থেকে বার করে দেওয়া হয়। দুপুর একটা থেকে রাত একটা গোটা সময়টায় ওই শুটারদের কেউ কেউ ঘুরলেন রাস্তায়। কেউ বসে থাকলেন হোটেলের লবিতে। ঘটনার রেশ গড়িয়েছে লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশন থেকে অলিম্পিক গেমস সংগঠন কমিটি পর্যন্ত। প্রতিবাদ জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থার কাছেও।
বিশ্বকাপ শুটিং শেষ হয়েছে শনিবারই। সে দিন দুপুরে হঠাৎ ভারতীয় শুটারদের হোটেল কর্তৃপক্ষ বলেন, দশ মিনিটের মধ্যে হোটেল খালি করে দিতে হবে। কারণ, তাঁদের আর থাকার অনুমতি নেই। ওই পর্যন্তই টাকা দেওয়া হয়েছে। অলিম্পিকে সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রা এই হোটেলে ছিলেন না। কিন্তু গগন নারাং, জয়দীপ-সহ অনেকেই ছিলেন সেখানে। |
নির্দেশ জারি করেই থেমে যাননি হোটেল কর্তৃপক্ষ, বেছে বেছে ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয় শুটারদের। অপমানিত, বিভ্রান্ত শুটাররা বসে থাকেন লাউঞ্জে। বাংলার জয়দীপ কর্মকারকে প্রথমে কেউ কিছু বলেনি। জয়দীপ অন্য সতীর্থদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ডেকে নেন তাঁর ঘরে। শেষ পর্যন্ত বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ জয়দীপকেও বার করে দেওয়া হয়। বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় লাউঞ্জে।
বিশ্বকাপের সংগঠক, ভারতীয় শুটিং সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিব্রত শুটাররা। কোনও লাভ হয়নি। বলা হয় লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশনকেও। বিশ্বকাপ সংগঠকরা হোটেলকে জানিয়ে দেন, তাঁদের কিছু করার নেই। বাড়তি খরচ দেওয়া হবে না। শুটারদের থাকার বন্দোবস্ত করতে দেওয়া হয়েছিল অন্য একটি সংস্থাকে। তারাই বাড়তি টাকা দেয়নি। ভারত ছাড়া আরও কয়েকটি দেশের শুটাররাও হেনস্থার শিকার হয়েছেন।
অলিম্পিকের মুখে এই ঘটনা ঘটায় হইচই হয়েছে ব্যাপক। ফোনে ধরা হলে জয়দীপ বললেন, “আমাদের নতুন হোটেল পাওয়া যায় রাত একটার সময়। অতক্ষণ কী করব, বুঝতে পারছিলাম না। কী জন্য এই ব্যাপারটা ঘটল, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।” অলিম্পিকের মুখে এই ঘটনায় চূড়ান্ত বিতর্কে জড়িয়েছেন লন্ডনের সংগঠকরা। তাঁদের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষের বোঝাপড়ার অভাবেই এই ডামাডোল।
বিন্দ্রা, নারাং, জয়দীপরা অবশ্য এই বিশ্বকাপে সবাই ব্যর্থ। অলিম্পিকে যে শুটিং রেঞ্জে নামতে হবে, সেখানে নেমেই ব্যর্থ হলেন তাঁরা। এ বার অলিম্পিকে শুটারদের উপরে ভারতের ভরসা অনেক। তাঁরাই লন্ডনে ব্যর্থ হওয়ায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে নানা রকম। জয়দীপ অবশ্য ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বললেন, “লন্ডনে এখন মারাত্মক ঠান্ডা। প্রচণ্ড বৃষ্টি। এর মধ্যে গুলি ছোড়া সমস্যা হয়ে পড়েছিল। তাই খারাপ ফল হয়েছে।” |