|
|
|
|
মিজোরামের ডাম্পা অরণ্যে বাঘের হদিস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
চোখে দেখা না মিললেও, শেষ অবধি বিষ্ঠা প্রমাণ করে দিল ডাম্পা এখনও বাঘশূন্য হয়নি। ৯টি বাঘ রয়েছে সেখানে। উত্তরবঙ্গের বাক্সার মতোই মিজোরামের ডাম্পার ক্ষেত্রেও আরণ্যকের বিষ্ঠা নমুনা গবেষণাকেন্দ্র এই পরীক্ষা চালায়।
ডাম্পা মিজোরামের বৃহত্তম অভয়ারণ্য। বাংলাদেশ ঘেঁষা, মামিট জেলার এই অভয়ারণ্যটি ১৯৯৪ সালে টাইগার রিজার্ভ-এর তালিকায় উঠেছে। ২০০ থেকে ৮০০ মিটার উচ্চতা অবধি বিস্তৃত, ৫৫০ বর্গ কিলোমিটারের এই ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অভয়ারণ্যে বাঘ ছাড়াও চিতাবাঘ, মেঘলা চিতাবাঘ, বুনো কুকুর, স্লথ, স্লো লরিস, বিন্টুরং, বৃহৎ কাঠবিড়ালি, সজারু, প্যাঙ্গোলিন, উল্ল্ক, গউর-সহ বিভিন্ন তফশীলভুক্ত প্রাণীর বাস। তবে নির্বিচারে চোরাশিকার, পর্যটনের পরিকাঠামো না থাকা, অরণ্য সংক্রান্ত সমীক্ষা ও পর্যাপ্ত তথ্য না থাকায় ডাম্পায় বাঘ আর রয়েছে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছিল।
ডাম্পার ডিএফও লালথানহুয়া জাথাং বলেন, “সম্প্রতি আরণ্যক ও বনবিভাগ, ডাম্পায় যে সমীক্ষা চালিয়েছে তাতে, বাঘের পায়ের ছাপ ও বিষ্ঠার নমুনা মেলে। বিষ্ঠাগুলি, আরণ্যকের গুয়াহাটি গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছিল। তবে, ক্যামেরায় বাঘের ছবি এখনও ধরা দেয়নি। ২০১০ সালের সুমারি অনুযায়ী, এখানে ৫টি বাঘ থাকার কথা।” আরণ্যকের তরফে জানানো হয়েছে, বিষ্ঠার ২৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ডাম্পায়, ৯টি বাঘ থাকার প্রমাণ মিলেছে।
মিজোরামের বনকর্তারা জানান, দুর্গম ডাম্পার হাল-হকিকৎ জানতে,ছয় দফায় সমীক্ষা হবে। প্রথম তিন দফায়, নমুনা সন্ধান, ক্যামেরা ট্রাপিং ও বিষ্ঠা সংগ্রহের কাজ শেষ। চতুর্থ পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে। ক্যামেরা ট্র্যাপিং-এ মোট ৫৫টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে, কেবলমাত্র উত্তর অংশে ক্যামেরা ট্র্যাপিং হয়েছে। দক্ষিণের কাজ এখনও বাকি। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তের ৩১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার এলাকা ডাম্পার আওতায় পড়ে। বাঘেদের, বাংলাদেশের দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে বিদ্যুতের বেড়া বসাবার কাজ হচ্ছে, তা নিয়েও মিজোরাম বন দফতর আপত্তি জানিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, বাঘ বা অন্য প্রাণীদের স্বাভাবিক চারণভূমি দুই দেশের অরণ্য জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। রাজনৈতিক কারণে, তাদের প্রাকৃতিক চলাচলের পথে বেড়া বসালে, তা প্রাণী অধিকারের পরিপন্থী হবে। অন্তত পাঁচটি পশু চলাচলের এলাকাকে মুক্ত রাখার আবেদনও জানিয়েছে তারা। এ নিয়ে, ইতিমধ্যে, চারবার সুপ্রিম কোর্টে এফিডেভিট দাখিল করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|