নোনাডাঙায় পুনর্বাসনপ্রাপ্ত বা পুনর্বাসন পাবেন এমন বাসিন্দাদের এখনও কী কী পরিকাঠামোগত সমস্যা পোহাতে হচ্ছে, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বিশিষ্ট জন অর্পিতা ঘোষ। রবিবার নোনাডাঙার স্থানীয় বাসিন্দারা আবাসন ও এলাকার সার্বিক জীবনযাত্রার উন্নয়নের দাবিতে একটি সম্মেলন করেন। সেখানে গিয়ে অর্পিতা ওই কথা জানান। পক্ষান্তরে, এ দিনই নোনাডাঙার উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মত প্রকাশ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার পক্ষে সওয়াল করে বিশিষ্ট জনেদের অন্য একটি অংশ।
নোনাডাঙার সম্মেলনে সেখানকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, “এলাকায় স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। রাস্তা খারাপ। বিদ্যুৎ, জলেরও সমস্যা রয়েছে। বামফ্রন্ট সরকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলেও বাজার-সহ স্থানীয় পরিকাঠামোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার কিছুই হয়নি।” অভিযোগ সমর্থন করে অর্পিতা বলেন, “নাগরিক সমাজের এক জন হিসেবেই এখানে এসেছি। আসার সময় দেখলাম, এখানকার রাস্তা খুব খারাপ। স্বাস্থ্যকেন্দ্র-স্কুল কিছুই নেই কাছাকাছি। মানুষের অসুবিধাগুলি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাব।” পাশাপাশি, নোনাডাঙার বাসিন্দাদের প্রতি অর্পিতার পরামর্শ, তাঁরা যেন প্রশাসনকেও তাঁদের সমস্যা জানান। |
নোনাডাঙার যে সব জবরদখলকারীকে সম্প্রতি উচ্ছেদ করা হয়েছে, রাজ্য সরকারের তাঁদের পরিচয় চিহ্নিত করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন অর্পিতা। তিনি বলেন, “পুনর্বাসন পেয়েছেন, এমন অনেক বাসিন্দাও ফ্ল্যাট বিক্রি করে এখানে ঝুপড়ি করে থাকছিলেন বলে অভিযোগ পাচ্ছি। সুতরাং, ঝুপড়িবাসীদের পরিচয় সরকারের জানা দরকার। তা হলেই সত্যিটা বোঝা যাবে।” ঝুপড়িবাসীদের ‘ব্যবহার করে’ ‘কৃত্রিম’ আন্দোলন তৈরি করে রাজ্য সরকারকে ‘কালিমালিপ্ত’ করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন অর্পিতা।
তবে এ দিনই কলেজ স্ট্রিটের স্টুডেন্টস হলে পাল্টা একটি কনভেনশনে নোনাডাঙার ‘উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র আন্দোলনের পাশে দাঁড়ায় বিজ্ঞানী, অধ্যাপক, শিক্ষকদের একাংশ। ওই কনভেনশনে সাহিত্যিক দেবেশ রায়, নোনাডাঙা আন্দোলন থেকে গ্রেফতার ও পরে মুক্ত বিজ্ঞানী পার্থসারথি রায় এবং রঙ্গচিত্র-কাণ্ড সূত্রে পরিচিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র ওই কনভেনশনে বক্তৃতা করেন। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের সংবাদপত্র-ফতোয়ার প্রতিবাদে এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারভাঙা হলে আর একটি কনভেনশন হয়। সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্যসভার সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ অপরাজিতা গোপ্পী, প্রাক্তন মন্ত্রী নরেন দে বক্তৃতা করেন। বরুণবাবু বলেন, “সাধারণ গ্রন্থাগারগুলিতে কোন কোন সংবাদপত্র রাখা হবে, তা ঠিক করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এটা সাধারণ গ্রন্থাগার আইনের পরিপন্থী এবং এর মধ্যে প্রধান শাসকদলের ফ্যাসিস্ত ঝোঁক স্পষ্ট।” |