|
|
|
|
লক্ষ্য কুটিরশিল্পের বাজার বৃদ্ধি |
পশ্চিমের প্রথম স্থায়ী গ্রামীণ হাট ঝাড়গ্রামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কুটির-শিল্পের বাজার বাড়াতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রথম স্থায়ী গ্রামীণ-হাট তৈরি হবে জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র ঝাড়গ্রামে। এ জন্য ঝাড়গ্রাম শহরে ০.৫ একর জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থায়ী হাটের পাশাপাশি শিল্পীদের থাকারও বন্দোবস্ত থাকবে সেখানে। তৈরি হবে আবাসন। প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ডের (বিআরজিএফ) বরাদ্দ অর্থে এই প্রকল্প হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নিয়ে শুক্রবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) উত্তম পাত্রের সঙ্গে আলোচনা করেন জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রহ্লাদ হাজরা। আগামী ২ মে ফের কলকাতায় এ নিয়ে বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকেই কুটির শিল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঝাড়গ্রামে গ্রামীণ-হাট তৈরির কাজ শুরু করতে চাইছে প্রশাসন। চিহ্নিত জমি সংশ্লিষ্ট দফতরের হাতে শীঘ্রই হস্তান্তর করা হবে। অতিরিক্ত জেলশাসক (উন্নয়ন) বলেন, “ঝাড়গ্রামে স্থায়ী হাট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি হলে শিল্পীরা উপকৃত হবেন।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় এক লক্ষ মানুষ নানা ধরনের শিল্প-কর্মের সঙ্গে যুক্ত। সবং, পিংলা, দাসপুর থেকে বেলপাহাড়ি--সর্বত্র শিল্পীরা ছড়িয়ে রয়েছেন। জেলায় পাথর খোদাই, পট, ডোকরা, বাঁশ, বেত, কাঁসা, পিতল থেকে শুরু করে জরি, সফট টয়েজ, বাবুই ঘাসের সামগ্রী তৈরির শিল্পের চল রয়েছে। তবে স্থায়ী বাজার না-থাকায় শিল্পীদের যেমন সমস্যায় পড়তে হয়, তেমনই ক্রেতারাও সমস্যায় পড়েন। চাইলেই কোথাও গিয়ে কুটির শিল্পের সামগ্রী কিনতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও কুটির-শিল্পের বাজার বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তৈরি হচ্ছে স্থায়ী হাট। যেখানে বছরের সব সময়ই শিল্পীরা তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসতে পারবেন। আপাতত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও জলপাইগুড়িতে গ্রামীণ-হাট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। শহরের স্থায়ী হাট তৈরি হওয়ার কথা শিলিগুড়ি, শান্তিনিকেতন ও সল্টলেকে। দুর্গাপুরে ইতিমধ্যে এই হাট তৈরি হয়েছে। কুটির শিল্পের বাজার বাড়াতেই স্থায়ী গ্রামীণ-হাট তৈরির পরিকল্পনা বলে ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ ও বস্ত্র দফতর সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা রোটেশনে স্থায়ী হাটে তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসার সুযোগ পাবেন। প্রাথমিক ভাবে যে পরিকল্পনা হয়েছে, তাতে ঝাড়গ্রামের হাটে ১০টি বড় স্টল, ১০টি ছোট স্টল ও ১০টি আউটডোর স্টল থাকবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন শিল্পী এখানে থাকতে পারবেন। জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রহ্লাদ হাজরা বলেন, “দূর থেকে যাঁরা তাঁদের হাতে তৈরি পসরা নিয়ে হাটে আসবেন, তাঁরা তো রোজ বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন না। তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত থাকবে।”
কুটির শিল্পের উন্নয়নে গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক ও জেলা-স্তরে আরও কিছু প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কমিউনিটি প্রোডাকশন সেন্টার, ব্লক স্তরে কমিউনিটি ফেসিলিটি সেন্টার ও জেলা-স্তরে কমন ন্যাচরাল ফাইবার সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ড থেকেই। জেলার খড়্গপুরে ন্যাচরাল ফাইবার সেন্টার তৈরি হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। সেন্টারে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। তার ফলে শিল্পীরা এখানে এসে কম সময়ে বেশি সামগ্রী তৈরি করতে পারবেন। তাঁদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরে যে হস্তশিল্পের বাজার রয়েছে তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। গত জানুয়ারিতে মেদিনীপুর শহরে হস্তশিল্প মেলা হয়। দু’সপ্তাহ ধরে চলে। এই মেলায় প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যায়, কুটির-শিল্পের প্রতি জেলার মানুষের একটা আলাদা আগ্রহ রয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে খবর, ন্যাশনাল ফাইবার মিশন প্রকল্পের আওতাতেই গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক ও জেলা-স্তরে সেন্টার তৈরির কাজ হবে।
|
শিল্পে লগ্নিতে বাড়বে আস্থা-সূচক, দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থা বা আইএমএফের অশনি সঙ্কেতের মধ্যেও সামান্য আশার আলো। বণিকসভা সিআইআই-এর শিল্পে লগ্নি সংক্রান্ত আস্থা-সূচক (বিজনেস কনফিডেন্স ইন্ডেক্স) বলছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে উৎপাদন ক্ষমতার ব্যবহার বা লগ্নির মাপকাঠিতে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হবে। তবে ২০০টি সংস্থাকে নিয়ে সমীক্ষায় এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে সূচক দাঁড়াবে ৫৫। গত বছরের একই সময়ের সম্ভাব্য আস্থা-সূচকের (৬২.৫) তুলনায় যা এখনও কম। আস্থা ফেরাতে বণিকসভাটি জরুরি কয়েকটি ক্ষেত্রে সংস্কারের পক্ষেই সওয়াল করেছে। তবে সিআইআই আশাবাদী এই যুক্তিতে যে, জানুয়ারি-মার্চের চেয়ে এপ্রিল-জুনের আস্থা-সূচক ঊর্ধ্বমুখী। ৩টি ক্ষেত্রে অগ্রগতির ইঙ্গিতও মিলেছে। যেমন, দেশে লগ্নির অঙ্ক, উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে। খুলবে নতুন নিয়োগের দরজাও। |
|
|
|
|
|