মুর্শিদাবাদের রাইগ্রামে বুধবার বিকেলে জরুরি অবতরণ করা বাংলাদেশের যুদ্ধবিমানের চালক রাশেদুল ইসলামকে জেরা শুরু করল বায়ুসেনার অফিসারেরা।
বৃহস্পতিবার সকালে বহরমপুর থেকে তাঁকে কলকাতায় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর ফোর্ট উইলিয়ামে
|
রাশেদুল ইসলাম |
নিয়ে যান সেনা কর্তারা। এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদের পরে দুপুরেই তাঁকে পাঠানো হয় ব্যারাকপুরের বায়ুসেনা ছাউনিতে। সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ৪১ নম্বর ফ্লাইং স্কোয়াডের শিক্ষানবিশ ফ্লাইং ক্যাডেট রাশেদুল, আদৌ বিমান চালাতে পারেন কিনা তা সরজেমিন দেখতেই তাঁকে ব্যারাকপুর পাঠানো হয়েছে।
সেখানে পড়শি রাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্যও তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস), সৈয়দ তারিক হোসেন এ দিন সকালেই কলকাতা থেকে রাইগ্রামের ওই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। হাইকমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘নিয়মমাফিক’ জেরা-পর্ব মিটলেই রাশেদুলকে ঢাকা পাঠানো হবে।
এ দিন সকালে ভারতীয় বায়ুসেনার দিুই উইং কমান্ডর দীপক দত্ত ও বিশাল ভার্গিস ঘটনাস্থলে আসেন। দীপকবাবু বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশের ওই চালককে জেরা করে আমরা কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনারের হাতে তুলে দেব।”
|
রাতে ওই যুদ্ধবিমান চালককে স্থানীয় ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসাও করানো হয়। সালারের ব্লক মেডিক্যাল অফিসার সত্যজিৎ সরকার বলেন, “ওঁর বাঁ পায়ের হিপ-জয়েন্টে আঘাত রয়েছে। ব্যথা কমানোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে।”
বিমান চালানোর ধকল কিংবা সেনাবাহিনীর জেরার মুখে সকাল থেকেই বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল রাশেদুলকে। তিনি বলেন, “যশোহর এয়ারপোর্ট থেকে বিকেলে বিমান নিয়ে উড়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই আচমকা কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে যাওয়ায় আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। সেই সঙ্গে ছিল ঝড়ের দাপট। বিমানের উপরে আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সাড়ে ৫টা নাগাদ এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ক্রমশ জ্বালানি কমে আসছিল। বাধ্য হয়ে ওই মাঠে বেলি ল্যান্ড করানো ছাড়া আমার কাছে কোনও উপায় ছিল না।” |
অবতরণের পরে স্থানীয় গ্রামবাসী মণিরুদ্দিন শেখের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন রাশেদুল। মণিরুদ্দিনের ভাই জহিরুল শেখ বলেন, “সেই সময়ে দাদার বাড়িতেই ছিলাম। লোডশেডিং চলছিল। অন্ধকারের মধ্যে বিকট আওয়াজ। তার পরেই দেখি বাড়ির বাইরে এক জন পাইলটের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে।” হতভম্ব রাশেদুল প্রথমে কেঁদেই পেলেছিলেন। পরে ধাতস্ত হয়ে ওই গ্রামবাসীর বাড়িতে চা-বিস্কুট খান তিনি।
|