৫৯টা ‘কাট’-এর পরে মিলেছিল ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেট। তৎসত্ত্বেও টিভির পর্দায় আটকে গেল ‘ডার্টি পিকচার’।
রবিবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ‘ডার্টি পিকচার’ দেখানোর কথা ছিল। দুপুর ১২টা এবং রাত ৮টার স্লটে। কিন্তু শনিবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে চ্যানেলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, দুপুর বা সন্ধেয় নয়। ছবিটি দেখাতে হলে রাত ১১টার পরে দেখাতে হবে। কিন্তু চ্যানেল কর্তৃপক্ষ রাত ১১টার স্লটেও ‘ডার্টি পিকচার’ দেখাননি। রবিবার সকাল থেকেই ওই চ্যানেলে বারবার বিজ্ঞপ্তি দেখানো হয়: ‘‘আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, অনিবার্য কারণে আজ ‘ডার্টি পিকচার’ দেখানো যাচ্ছে না। দর্শকের অসুবিধার জন্য দুঃখিত।”
লাস্যময়ী দক্ষিণী নায়িকা সিল্ক স্মিতার জীবন অবলম্বনে ‘ডার্টি পিকচার’ ছবিটি এমনিতে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির সময় ‘এ’ সার্টিফিকেট পেয়েছিল। সাধারণ ভাবে ‘এ’ বা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত ছবির ক্ষেত্রে টেলিভিশনে দেখানোর জন্য একটি আলাদা সংস্করণ তৈরি করা হয়। এর আগে ‘দিল্লি বেলি’ ছবিটির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি নেওয়া হয়। ‘ডার্টি পিকচার’-ও সেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গিয়েছিল। ৫৯টা ‘কাট’-এর পর ছবিটিকে টেলিভিশনের জন্য ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেট দেয় কেন্দ্রীয় ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ড (সিবিএফসি)।
সংবাদসংস্থার খবরে প্রকাশ, সিবিএফসি-র নিয়ম অনুযায়ী টিভিতে দুপুর বা সন্ধের স্লটে কেবল ‘ইউ’ সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছবিই দেখানো যায়। ‘ইউ/এ’ বা ‘এ’ সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছবি রাতের আগে দেখানো যায় না। এর আগে রামগোপাল বর্মা-র ‘সত্য’ ছবিটিও রাতের স্লটেই দেখানো হয়েছিল। অথচ ফিল্ম এবং টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িতদের অনেকেরই বক্তব্য, ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছবির জন্য এমন কোনও বিধিনিষেধ নেই। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় ‘বাইশে শ্রাবণ’ বা ‘শূন্য এ বুকে’-র মতো ছবি প্রেক্ষাগৃহে ‘এ’ সার্টিফিকেট নিয়ে মুক্তি পেয়েছিল। পরে টেলিভিশনের জন্য কাটছাঁট করে দু’টি ছবিই ‘ইউ/এ’ তকমা নিয়ে প্রাইম স্লট অর্থাৎ দুপুর এবং সন্ধের সময়েই দেখানো হয়েছিল। তা হলে ‘ডার্টি পিকচার’ নিয়ে আপত্তি কেন? রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও এ নিয়ে সেন্সর বোর্ডের তরফে কেউ মুখ খোলেননি।
‘ডার্টি পিকচার’-এর সম্প্রচার স্থগিত হয়ে যাওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বিষয়টি তাঁরা মোটেই ভাল ভাবে নেননি। ওঁদের প্রশ্ন, “টিভিতে দেখানোর উপযোগী কাটছাঁট এবং ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেটের পরেও যদি রাতের আগে ছবি দেখানো না যায়, তা হলে লাভটা কী? যে সরকার ছবিটিকে জাতীয় পুরস্কার দিল, সেই সরকারই ছবিটা দেখাতে দিচ্ছে না!” ছবিটির প্রযোজক সংস্থা বালাজি-র শাখা বালাজি টেলিফিল্মসের সিইও তনুজ গর্গ টুইটারে লিখেছেন, “সরকারের রাজস্ব আদায়ের অন্যতম উৎস ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। অথচ তার প্রতি সরকারের আচরণে সহযোগিতার ছিটেফোঁটা নেই।” কর্ণ জোহর, সুহেল শেঠ, তসসিমা নাসরিনরাও এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করে টুইট করেছেন!
একটাই প্রশ্ন উঠে আসছে এই মুহূর্তে সিল্কের ভূমিকায় অভিনয় করে বিদ্যা বালান জাতীয় পুরস্কার পেতে পারেন! কিন্তু টেলিভিশন সেটের পর্দায়, দর্শকের ঘরে ঢুকে পড়ার ক্ষেত্রে সিল্ক-কাহিনি কি এখনও এতটাই ‘বিপজ্জনক’? |