একবার আগুন লাগলে যে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে, সে আশঙ্কা ছিলই। তার পরেও জতুগৃহে পরিণত হওয়া দার্জিলিংয়ের চকবাজারকে বাঁচাতে কোনও রকম পরিকল্পনাই প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তার পরিণতি হিসেবেই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আগুন লেগে পুড়ে যায় চকবাজারের একটি অংশ। আগুন নেভাতে নাজেহাল হতে হয় দমকল কর্মীদের। দমকলের উত্তরবঙ্গের ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরপ্রসাদ ঘোষ বলেন, “আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। অপরিসর রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হয়। আগুন গলির আরও ভেতরে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষতি বাড়ত। সামান্য জল দিয়ে দমকল কর্মীরা যেভাবে কাজ করেছেন তা ভাবা যায় না। প্রশাসনকে সব জানাব।”
কেন দার্জিলিং পরিকল্পনামাফিক গড়ে ওঠেনি সে প্রশ্নে মোর্চার অভিযোগের তির, পূর্বতন বাম সরকার এবং জিএনএলএফের বিরুদ্ধে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “জিএনএলএফ এবং বাম সরকার দার্জিলিংয়ের জন্য কোনও কাজ করেনি। শহরের অবস্থা ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হওয়ার পর পাহাড়ে উন্নয়নের জোয়ার আসবে। দার্জিলিংয়ের চেহারা বদলে দেওয়া হবে।”
সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য দার্জিলিংয়ের ওই পরিস্থিতির জন্য জিএনএলএফকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে দার্জিলিঙে কার্যত কোনও কাজ করা যায়নি। সেখানে যাতে অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি, দোকান তৈরি করা না হয় সে জন্য আইন তৈরি করা হয়। বহু বার গিয়ে প্রশাসন, দার্জিলিং পুরসভাকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। আমরা দুর্গতদের পাশে রয়েছি।”
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চকবাজারে আগুন লেগে ১৪০টি দোকান, ২১টি বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এইচডি লামা রোড, এনবি সিংহ রোড এবং হিলকার্ট রোডের প্রায় সমস্ত দোকান পুড়ে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় আগুন নেভানোর জন্য জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। রাস্তাগুলি খুবই সঙ্কীর্ণ। দমকলের ট্যাঙ্কের জল শেষ হয়ে গেলে পুরসভার পানীয় জলের ট্যাঙ্ক ঘটনাস্থলে যায়। ওই সময়ের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান অমর সিংহ রাই বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে বাজার তৈরির জন্য ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা চলছে।” |