আই লিগ খেতাব হাতছাড়া হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই নতুন লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছেন তিনি। রবিবার বিকেলেই জর্ডনে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে বেরিয়ে যাচ্ছে তাঁর দল। তার আগে শনিবার আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান।
প্রশ্ন: আই লিগ শেষ হওয়ার পনেরো দিন আগেই খেতাব দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন। এ বার লক্ষ্য কী?
মর্গ্যান: যে কোনও মূল্যে রানার্স হতে চাই। শেষ দু’টো ম্যাচ জিতলে ৫১ পয়েন্ট হবে। গতবারও ঠিক ওই জায়গায় শেষ করেছিলাম।
প্র: তা হলে তো এ বছর কোনও উন্নতি হল না?
মর্গ্যান: গতবার ফেড কাপে নামার আগে পাঁচটা কলকাতা লিগের ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছিল আমাদের। প্রাক মরসুম শিবিরও খুব ভাল হয়েছিল। কিন্তু এ বার সেই সুযোগ পাইনি। উল্টে ফেড কাপকেই কিনা প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট হিসেবে খেলতে হল!
প্র: লক্ষ্যচ্যূত হওয়ার পিছনে ঠিক মতো প্রাক প্রস্তুতি শিবির না পাওয়াই কি একমাত্র কারণ?
মর্গ্যান: অবশ্যই না। সবচেয়ে বড় চোট-আঘাত সমস্যা। ভাসুম, নওবা, মেহতাব কাউকেই পুরো মরসুম পেলাম না। গতবার মেহতাব সেরা মিডফিল্ডার হয়েছিল। ওপারা সেরা ডিফেন্ডার। একটু ভাবলে দেখবেন, ওপারা সেরা হয়েছিল মাঝমাঠে মেহতাব অসাধারণ ফুটবলটা খেলেছিল বলে। এ বছর মেহতাব না থাকায় ওপারার উপর চাপ বেড়ে গিয়েছে। আগের বারের চেয়ে এ বার গোলও কম হয়েছে আমাদের।
প্র: ন’বছর কলকাতায় আই লিগ নেই। গোয়া ফুটবল কোথায় এগিয়ে মনে হচ্ছে?
মর্গ্যান: আমি মোটে দু’বছর হল এ দেশে এসেছি। বিদেশি কোচ বলে তো আর জাদুকর নই যে, এলাম আর ট্রফি দিয়ে দিলাম। সাফল্য পাওয়ার জন্য সময় দিতে হয়। ডেম্পো যে কাজটা গত সাত-আট বছর ধরে করে যাচ্ছে। কোচ তো বটেই, যে সব ফুটবলার সাফল্য দিয়েছে তাদেরও ধরে রেখেছে। একটা দলের মেরুদণ্ড এ ভাবেই শক্ত হয়।
প্র: আপনিও তো গতবারের দলই ধরে রেখেছেন।
মর্গ্যান: পরের বারও ধরে রাখতে চাই। অন্তত নব্বই শতাংশ ফুটবলার এক থাকবে। তবে ভারতীয় ফুটবলে রেফারিদের মান বাড়াতে হবে। ব্যর্থ হলে কোচকে তাড়ানো হয়, ফুটবলার বদল হয়। কিন্তু খারাপ খেলালে রেফারির কোনও শাস্তি হয় না!
প্র: ডেম্পোর কাছে আই লিগ হারানোর ব্যাখ্যা কী দেবেন?
মর্গ্যান: প্রথমেই বলি ডেম্পোর কাছে আমরা হারিনি। ২-১ আর ০-০ স্কোরলাইন অন্তত সেটাই বলছে। আমরা লিগ পেলাম না কিছু জেতা ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করায়। বিশেষ করে পুণে আর লাজং ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করা উচিত হয়নি। যার জন্য কিছুটা দায়ী স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতা, কিছুটা খারাপ রেফারিং, কিছুটা ভাগ্য। শুক্রবারও ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের একই কথা বলেছি। অতিরিক্ত যাতায়াতেও প্রচুর ধকল হয়েছে।
প্র: মরসুমের শেষ বলে কি দলবদলের কোনও প্রভাব ফুটবলাদের খেলায় পড়ছে?
মর্গ্যান: দলবদল নিয়ে কলকাতাতেই যত হইচই। গোয়া বা অন্য কোথাও কিন্তু এ সব নিয়ে মাতামাতি হয় না। মাঠের বাইরের ঘটনায় একটু চাপ তো থাকেই।
প্র: আপনার বিচারে ইস্টবেঙ্গলে মরসুমের সেরা ফুটবলার কে?
মর্গ্যান: পেন ওরজি। এ বছর দুর্দান্ত খেলেছে। পেন যদি আর কয়েকটা গোল করতে পারত, তা হলে ওকে নিয়েই সবাই নাচানাচি করত। |