ফেসবুক বা টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এখন জীবনের অঙ্গ এবং সেটা মেনে নিয়েই এগোতে হবে বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
শনিবার কলকাতায় বণিকসভা আইসিসি-র একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন খুরশিদ। সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে আসে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং নিয়ে সরকারের ভূমিকার প্রসঙ্গ। সম্প্রতি ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রঙ্গচিত্রকে ঘিরে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বাক-স্বাধীনতার অধিকার কত দূর, তাই নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। সিআইডি-র পক্ষ থেকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। এই আবহে কলকাতায় বসে খুরশিদের মন্তব্যকে তাই আলাদা করে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ফেসবুকে সনিয়া-মনমোহনের রঙ্গচিত্র নিয়ে খড়্গহস্ত হয়ে উঠতে গিয়েছিল কেন্দ্রও। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিব্বল ফেসবুক-টুইটারে কিছুটা রাশ টানার প্রস্তাবও করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর করা তো যায়ইনি, উপরন্তু সিব্বলকে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হয়। সুতরাং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট নিয়ে কেন্দ্র নিজেই ধাক্কা খেয়ে অনেক বেশি সাবধানী এখন। এ দিন খুরশিদের কথাতেও তারই ইঙ্গিত ছিল। তিনি বলেন, ফেসবুক বা টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ‘জীবনের অঙ্গ’ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে ‘বিব্রত’ হওয়ার কিছু নেই। কড়া আইন তৈরিরও জায়গা নেই। কেন্দ্র বা রাজ্য, যে-ই এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করুক, তা ‘জনস্বার্থ’কে মাথায় রেখেই করতে হবে। তিনি মনে করিয়ে দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও উইকিলিকস-এর কাজকর্ম ঠেকাতে পারেনি।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর ক্ষমতার কথা এ দিন খুরশিদ সরাসরি স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, “যে কোনও মতামত নিয়ে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে ফেসবুকের মতো মাধ্যম।” তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক, দু’টি দিকই রয়েছে। খুরশিদের কথায়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের মাধ্যম মানুষকে আনন্দ দেয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয়ের সঙ্গে একমত হওয়া যায় না। তাই তাঁর বক্তব্য, ভারসাম্য রেখেই এ ধরনের মাধ্যমকে ব্যবহার করা উচিত। তবে সরাসরি না বললেও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এ বিধিনিষেধ আরোপ করা যে সরকারের লক্ষ্য নয়, তাও জানান খুরশিদ। এ বিষয়ে নতুন করে কোনও আইন করার প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না। খুরশিদ জানান, সাইবার আইন মানবসম্পদ দফতরের অধীনে রয়েছে। ওই দফতর থেকে এ বিষয়ে নয়া কোনও আইন তৈরির সুপারিশ করা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও এ দিন সলমন খুরশিদকে ভোডাফোন-বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি স্পষ্ট জানান, কর ফাঁকি দেওয়ার জায়গা হিসেবে ভারতকে বেছে নেওয়া যাবে না। কিন্তু তাই বলে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। |