বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়াতে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং সুবিচার পাওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের সার্ধশতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে শনিবার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মমতা। প্রধান অতিথি হিসাবে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন উপ রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলতামাস কবীর, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল-সহ আরও অনেকে।
মমতা জানান, রাজ্যের গরিব, দুঃস্থ মানুষও যাতে বিচারবিভাগীয় পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, তার জন্য রাজ্য সরকার সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “আমরা সরকারে আসার পর বিচারবিভাগের যা যা প্রয়োজন ছিল, সব করে দিয়েছি। বিচারক থেকে শুরু করে আদালতগুলিতে অন্যান্য শূন্য পদে নিয়োগ করেছি।” তিনি জানান, বিচারবিভাগে পরিকাঠামোগত কিছু আধুনিকীকরণ দরকার হয়ে পড়েছে। যে কোনও মামলার সওয়াল-জবাব যাতে ভাল করে শোনা যায়, তার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কথাও বলেন মমতা। |
বিচারবিভাগে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির পরামর্শ দিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিও। এ দিন তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টেই ৫৬ হাজারের মতো মামলার এখনও কোনও রায় হয়নি। হাইকোর্ট এবং দেশের অন্যান্য আদালতে সব মিলিয়ে তিন কোটিরও বেশি মামলা জমে রয়েছে। শুনানির ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত সময় লাগাই এর মূল কারণ বলে উপরাষ্ট্রপতি এ দিন মন্তব্য করেন। দিনের পর দিন মামলার শুনানি হওয়া এবং বারবার শুনানির দিন পিছিয়ে যাওয়ার বন্ধ হওয়া উচিত বলে আনসারি মনে করেন।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের প্রায় প্রত্যেকেই আইনি পরিষেবাকে একেবারে আমজনতার ঘরের দরজায় নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন। আরও বেশি মানুষকে বিচারব্যবস্থার আওতার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য ই-কোর্ট পরিষেবার উপর কেন্দ্রীয় সরকার জোর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
আরও এক ধাপ এগিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলতামাস কবীর জানিয়েছেন, সারা দেশ জুড়ে যেমন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে, ঠিক একই রকম ভাবে আইনি পরিষেবা কেন্দ্রও গড়ে তোলা প্রয়োজন। মানুষ কোনও রকম বিপদে পড়লে ওই কেন্দ্রগুলি থেকে প্রাথমিক পরামর্শটুকু দেওয়া গেলেও অনেক মানুষ উপকৃত হবেন বলে তিনি মনে করেন। |