কাঁটাতারের বেড়ার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটছিল বাবলি। ও পার থেকে আজ তার মামার আসার কথা। বেড়ার ফাঁক দিয়ে কথা হবে। হাতে মাত্র দু’ঘণ্টা সময়। এতগুলোর লোকের মাঝে মামাকে খুঁজে পাব তো!
নতুন বছরের প্রথম দিনে প্রতি বারের মতো সীমান্তের দু’পারের মানুষের জন্য ‘মিলন মেলা’র আয়োজন করেছিল বিএসএফ। দু-দেশ থেকে প্রচুর লোক এসেছিলেন। বাবলির মতো তাঁরা কেউ এসে ছিলেন স্বজনের খোঁজে। কেউ বা এক টুকরো স্মৃতি হাতড়াতে।
শনিবার সকাল ১১টা থেকে রাজগঞ্জ থানার কুকুরজান পঞ্চায়েতের খালপাড়া সীমান্ত এলাকায় ওই মেলায় আসতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুই বাংলার বাসিন্দারা তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে দেখলেন। সুখদুঃখের কথাও বললেন। |
বিএসএফের কমাড্যান্ট বিজয় সিংহ বলেন, “নতুন বছরের প্রথম দিনে যাতে দুই পারের বাসিন্দারা তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে দেখতে পান, কথা বলতে পারেন, সেই জন্যই মিলন মেলা।”
সবাই যে নিজেদের নিকটজনকে দেখতে পেয়েছেন তা নয়। আবার যাঁরা দেখা পেয়েছেন তাঁদের কাছে সময়টা খুবই কম বলে মনে হয়েছে। ভারতের চাউলহাটির বাসিন্দা গৌতম শীল যে দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও কাকা উকিল শীলের দেখাই পেলেন না। আবার ভারতের খালপাড়া সংলগ্ন ভাঙামালির রোশেনারা বেগম বাংলাদেশের চিলাহাটির তাঁর প্রিয়জনদের দেখা পেয়েছেন। বাংলাদেশের আব্দুল হালিম ভারতের বেলাকোবার বাসিন্দা মকবুল হোসেনের দেখা পাননি বলে কেঁদেই ফেললেন। দুই পারের বাসিন্দারা বলেন, “প্রথমে বলা হয়েছিল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মেলা চলবে। পরে তা দু’ঘন্টা করা হয়। আত্মীয়দের খুঁজে বার করার জন্য সময়টা খুবই কম।” কুকুরজান পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মোবারক হোসেন এবং খালপাড়ার পঞ্চায়েত সদস্য সবেন রায় বলেন, “আসলে কী জানেন ওপারের মানুষজনকে বড় ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। কর্তাদের (প্রশাসন) বলুন না সে সুযোগটুকু করে দিতে!” |