বিহার তুলে দিয়েছে। এ বার পশ্চিমবঙ্গেও কৃষিপণ্যের পাইকারি ব্যবসার উপর থেকে কর তুলে দেওয়ার দাবি জানাল ব্যবসায়ী মহল। কৃষিপণ্যের পাইকারি ব্যবসায় এক শতাংশ কর চালু আছে ১৯৭২ সাল থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের উপরে কর চাপানোর বিরুদ্ধে। তাঁর সেই নীতিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন এ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলতে চান, এ রাজ্যে কৃষিপণ্যকে ‘মুক্ত বাণিজ্য’ হিসেবে গণ্য করুক সরকার।
১৯৭২ সালের কৃষিপণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী রাজ্য সরকার জেলায় জেলায় কর আদায় করে। কর আদায়ের জন্য মহকুমা স্তরে ৪৪টি নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি আছে। ওই সব কমিটি কৃষিপণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা কর আদায় করে। সেই টাকায় কর্মীদের বেতন দেওয়ার পরে যা অতিরিক্ত থাকে, তা দিয়ে পঞ্চায়েত এলাকায় ছোট ছোট রাস্তা, নলকূপ এবং অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরির কাজ হয়। রাজ্য সরকার সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতিটি ব্লকে একটি করে নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি গঠন করে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে কৃষিপণ্যের ব্যবসায়ীদের সরকারের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে ‘লাইসেন্স’ নিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে কৃষিপণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ী সঙ্ঘ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে। সঙ্ঘের আহ্বায়ক সত্যনারায়ণ গুপ্ত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আমাদের আস্থা আছে। ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়ায় দীনেশ ত্রিবেদীকে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। আশা করি, কৃষিপণ্যের উপর থেকে কর তুলে নেওয়ার ব্যাপারেও তিনি ঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন।” কৃষিপণ্যের উপরে কর আদায় করে কৃষি বিপণন দফতর। ওই দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় অবশ্য ব্যবসায়ী সঙ্ঘের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। তাঁর কথায়, “বিহার সরকার কী করেছে, তা জানি না। তবে এ রাজ্যে সামান্যই কর নেওয়া হয়।” তিনি জানান, ওই করের টাকায় নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি চলে। এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নে টাকার একটি অংশ খরচ করা হয়।” তাঁর মন্তব্য, “ব্যবসা করতে গেলে কিছু কর তো দিতেই হবে। সরকারি নিয়ন্ত্রণ কিছু থাকবেই। তবে ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেতেই পারেন। মুখ্যমন্ত্রী যা বলবেন, তা-ই হবে।” |