রাত্তির এক সওয়া একটা-দেড়টার সময়ও হোটেলের লবিতে গিজগিজ করছে লোক। প্রথমে দেখে মনে হচ্ছিল, সৌরভের জন্য দাঁড়িয়ে। কিন্তু পরে দেখা গেল, সৌরভ নন। অত লোক দাঁড়িয়ে স্রেফ ধোনি দলবল নিয়ে ঢোকার অপেক্ষায়। আর ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ঢোকা মাত্রই চালু হয়ে গেল ‘দাদা..দাদা’ চিৎকার। ধোনির সামনেই জয়ধ্বনি পুণে এবং সৌরভের।
পুণে ক্রিকেটাররাও অসম্ভব খুশি এই জয়ে। কারণ তাঁরা মনে করছেন, চেন্নাইকে হারানোটা টিমের মনোবল অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে। শনিবার গভীর রাতেও পুণে-র ম্যারিয়ট হোটেলে শুধু উৎসবের ছবি। হোটেলের চোদ্দো তলায় আছেন পুণের ক্রিকেটাররা। চার-পাঁচজন ক্রিকেটার পার্টিতে যাওয়ার জন্য বেরোচ্ছিলেন রুম থেকে। হঠাৎই তাঁদের সামনে পড়ে গেলেন জেসি রাইডার। ব্যস্। আর পায় কে? জেসিকে দেখামাত্রই বাকিরা ছুটে গেলেন তাঁর দিকে। জড়িয়ে ধরতে। |
এই প্রথম কোনও মুখোমুখি যুদ্ধে ধোনির বিরুদ্ধে জিতলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কেকেআরের নেতৃত্বে যত বার দেখা হয়েছে, জিতেছে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। শনিবার রাতে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে সৌরভ বলছিলেন, “পিচটা অসাধারণ ছিল। চেন্নাইয়ের মতো টিমের বিরুদ্ধে জিততে পারলে বাড়তি উত্তেজনা হয়। আমার বোলারদের নিয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত। আশিস নেহরা আর অশোক দিন্দা খুব ভাল বল করেছে।” এই জয় পুণেকে পৌঁছে দিল লিগ টেবলের এক নম্বরে। ৪ ম্যাচে জয় ৩। পয়েন্ট ৬। সমসংখ্যাক ম্যাচ খেলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সও একই পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। তবে পুণে-র (+.৪৯১) চেয়ে নেট রান রেটে পিছিয়ে মুম্বই (+.৩৬১)। তাই দ্বিতীয়। তিন নম্বরে দাঁড়িয়ে বীরেন্দ্র সহবাগের দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ৩ ম্যাচে জয় ৪। কলকাতা নাইট রাইডার্স চারে। ৪ ম্যাচে গম্ভীরদের পয়েন্ট ৪।
ম্যাচ শেষে ধোনি সাফাই দিচ্ছিলেন, শেষ ওভারে কেন ইয়ো মহেশকে এনেছিলেন। বলে গেলেন, “ম্যাচ এমন পরিস্থিতিতে ছিল যে, সেখান থেকে যে কোনও দল জিততে পারত। শেষ ওভারে দেখতে চাইছিলাম কে বল করতে চায়? ইয়োমিকে জিজ্ঞেস করলাম, বল করবে কি না। ওকে দেখে যথেষ্ট পজিটিভ লাগছিল। তাই ওর দিকেই বল ছুঁড়ে দিয়েছিলাম। এ ভাবেই তো শিখতে হয়।” |
পুণে-কে জিততে হলে যে জেসি রাইডারের ভাল খেলা দরকার, তা ম্যাচের মাঝেই পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন রবি শাস্ত্রী। ধারাভাষ্য দিতে দিতে বলছিলেন, “রাইডারকে বেশিক্ষণ ধরে ব্যাট করতে হবে। নইলে পুণের সমস্যা হবে।” আর রাইডার বলছিলেন, “ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতে চেয়েছিলাম। স্টিভ স্মিথ কাজটা সোজা করে দিয়েছিল। প্রথম ম্যাচটা যে পিচে খেলেছিলাম তার চেয়ে এই উইকেটটা অন্য রকম ছিল। আমাদের হোম ক্রাউড অসাধারণ। প্রচণ্ড সমর্থন পাচ্ছি। স্মিথও খুব ভাল খেলেছে।” স্মিথ নিয়ে তুমুল প্রশংসা শোনা গেল শাস্ত্রী-সৌরভের মুখেও। পুণে নেতা সোজাসুজি বলে দিলেন, “ওকে শেষ যা দেখেছিলাম, সেখান থেকে প্রচুর উন্নতি করেছে।” আর শাস্ত্রী বললেন, “ওর ব্যাটিংয়ের সব চেয়ে ভাল দিক হল, প্রয়োজনমতো গ্যাপ খুঁজে নিতে পারে।” |