নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অবনতি’ এবং তিনটি জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের কাছ থেকে সব রকম আর্থিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হল বামেরা।
বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে বাম পরিষদীয় দলের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেছেন, যে ভাবে তিনটি জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের আর্থিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তা নির্বাচিত সংস্থাকে ভেঙে দেওয়ার সামিল। এই কাজকে ‘গণতন্ত্রের পরিপন্থী’ আখ্যা দিয়ে সূর্যকান্তর বক্তব্য, উন্নয়নের কাজ হচ্ছে না বলে যে তিনটি জেলা পরিষদের হাত থেকে আর্থিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল, কাজের নিরিখে তাদের স্থান দ্বিতীয়, ষষ্ঠ এবং ১৩ তম। অথচ তৃণমূলের দখলে-থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ এবং কংগ্রেসের হাতে থাকা উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ কাজের নিরিখে যথাক্রমে ১৮ এবং ১৭ তম স্থানে রয়েছে! |
প্রতিদিন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলেও রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানান সূর্যবাবুরা। কী ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত মহিলাদের উপরে অত্যাচার-আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে, সেই উদাহরণ তুলে ধরে বামেদের অভিযোগ, ১২ জানুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত ১০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে পুলিশ প্রাথমিক অবস্থায় অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছে অথবা শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। নারায়ণনের সঙ্গে আধ ঘণ্টা বৈঠকের পরে রাজভবনের বাইরে সূর্যবাবু বলেন, “আমাদের কথা ধৈর্য ধরে শুনে রাজ্যপাল বলেছেন, তাঁর পক্ষে যা করা সম্ভব, তা করবেন।”
ক্ষমতা হারানোর পরে বামেরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রায়ই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হচ্ছেন। বিষয়টিকে কটাক্ষ করে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “গণতন্ত্রে রাজ্যপালের যে ভূমিকা আছে, তা ওঁদের (বিরোধী) ঘনঘন রাজভবনে যাওয়ার মধ্যে দিয়েই প্রমাণ হয়েছে।” পার্থবাবুরা বিরোধী দলে থাকাকালীন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানাতে রাজভবনে যেতেন। তার উল্লেখ করে পার্থবাবু বলেন, “সেই সময়ে সিপিএম নেতারা বলতেন, তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর হাতে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে দিলেই হয়! আসলে ওরা টিউবলাইটের দল তো! তাই দেরিতে হলেও রাজ্যপালের ভূমিকা বুঝতে পেরেছেন।” |