নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শিক্ষা ক্ষেত্রে লাগাতার হানাহানি ও রক্তপাত বন্ধে কলেজ নির্বাচনের দায়িত্বও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে নিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশের মাসখানেক পরে, বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত হাইকোর্টে আবেদন করে জানালেন, তাঁদের পক্ষে কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়।
হাইকোর্টের বিচারপতি তপেন সেনের আদালতে বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের তরফে থেকে ওই আবেদনপত্র পাঠানো হয়। কেন তাঁরা ছাত্রভোটের দায়িত্ব নিতে পারবেন না, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন সুনীলবাবু। ওই আবেদনে তিনি লিখেছেন, কোন কোন নির্বাচন তাঁরা পরিচালনা করবেন, তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট করা আছে। তার বাইরে গিয়ে তাঁদের পক্ষে কলেজ নির্বাচনেরও দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া ছাত্রভোট পরিচালনার জন্য কোনও পরিকাঠামোও নেই নির্বাচন কমিশনের। মুখ্য নির্বাচনী অফিসার অপারগতার কথা জানিয়ে দেওয়ায় কলেজের নির্বাচনে সংঘর্ষ ঠেকাতে হাইকোর্ট এ বার কী সিদ্ধান্ত নেয় বা কী নির্দেশ দেয়, সেটাই দেখার।
নভেম্বরের শেষ থেকে রাজ্যের কলেজে কলেজে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-সংঘর্ঘ, অধ্যক্ষ-নিগ্রহ প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। ছাত্র সংসদের ওই সব নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে প্রচুর মামলা হয়। হানাহানির পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি তপেন সেন বেশ কয়েকটি কলেজে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশও দিয়েছিলেন। সেই সময়েই আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় একটি মামলার সূত্রে বিচারপতিকে লিংডো কমিশনের সুপারিশগুলি জানান। ওই কমিশন শিক্ষার অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের ব্যাপারেও কিছু সুপারিশ করেছিল।
কলেজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে লিংডো কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সরকারি আইনজীবীর কাছে তা জানতে চান বিচারপতি সেন। মামলার শুনানির সময়ে তিনি মন্তব্য করেন, কলেজে কলেজে সংঘর্ষের ঘটনার জেরে গোটা রাজ্যই জ্বলছে। রাজ্য সরকার আদালতকে জানায়, তারা একটি কমিটি তৈরি করেছে। কলেজ নির্বাচন নিয়ে একটি গাইডলাইন বা নির্দেশিকা তৈরি করবে সেই কমিটি।
সরকারি কমিটির নির্দেশিকা তৈরি না-পাওয়া পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের তত্ত্বাবধানেই কলেজে কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সেন। তার প্রায় এক মাস পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার আদালতে তাঁর বক্তব্য জানালেন। মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের এই আবেদনের প্রতিলিপি মামলার আবেদনকারী আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছেও পাঠানো হয়েছে। সুব্রতবাবু এ দিন বলেন, তিনি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের ওই আবেদনের বিরোধিতা করবেন। |