হোম থেকে আবাসিক বালিকা পালানোর ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে শোকজ করলেন জনশিক্ষা আধিকারিক। মঙ্গলবার জনশিক্ষা প্রসার দফতরের আধিকারিক শুভজিত মন্ডল বলেন, বালিকা পালানোর ঘটনায় হোম কর্তৃপক্ষের তরফে গাফিলতি ছিল। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি উঠে আসায় হোম কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। হোমের বেহাল অবস্থার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তবে সরকারি তরফে হোম পরিচলনায় আর্থিক বরাদ্দের করুণ চিত্র এদিন প্রকাশ হতে বিষয়টি অন্যমাত্রা নেয়। বিভাগীয় এক অফিসার বলেন, “যে টাকা বরাদ্দ হয়, তাতে দু’বেলা আবাসিকদের ঠিক মতো খাবার জোগাতে সমস্যা হয়। তার উপর বকাবকি ও মারধরের ঘটনা ঘটলে উৎসাহ হারিয়ে আবাসিকদের পক্ষে পালিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।” সোমবার সকালে বালুরঘাটের সরকারি আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত ওই হোম থেকে দশ বছরের বালিকা সরস্বতী হেমব্রম পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগে ওই খুদে বালিকা বাড়ির পথে হাঁটা দিয়ে রাস্তা হারিয়ে ফেলে। হোম থেকে চার কিলোমিটার দূরে সাহেবকাছারি এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ফের তাকে ওই হোমে পাঠানো হয়। বিভাগীয় সূত্রের খবর, ওই হোমে ৪৬ জন বালিকা ও কিশোরী রয়েছে। সরকারি নিয়মে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েরা এখানে থাকে। তাদের ভরণপোষণ বাবদ জনশিক্ষা দফতর থেকে আবাসিক পিছু প্রতি মাসে ৯০০ টাকা দেওয়া হয়। তার মধ্যে ১২০ টাকা আবাসিকদের লেখাপড়া, জামাকাপড়-সহ ব্যবস্থাপনা খাতে বরাদ্দ। বাকি ৭৮০ টাকায় হোমের আবাসিকদের এক মাসের খাওয়া খরচ চালাতে হয়। অর্থাৎ মাথা পিছু আবাসিকদের রোজ খাওয়া বাবদ বরাদ্দ মাত্র ২৬ টাকা। ওই সামান্য টাকায় কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করতে হয় হতদরিদ্র ওই আবাসিকদের।
হোম কর্তৃপক্ষের তরফে পলাতক ওই খুদে পড়ুয়াকে অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পাশাপাশি হোমের তরফে কৃষ্ণা চৌধুরী বলেন, “সরকারি বরাদ্দ টাকায় চলে না। বাইরে থেকে দান সংগ্রহ করে খুব সমস্যার মধ্যে সেবার মনোভাব নিয়ে হোমটি চলছে।” এদিন পলাতক ওই বালিকা সরস্বতীকে তার মা শেফালি দেবীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। আপাতত তাকে ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে বলে হোম থেকে জানানো হয়েছে। |