বাড়িতে ডেকে এনে খাবারে বিষ মিশিয়ে প্রেমিককে মেরে ফেলার অভিযোগে এক তরুণী ও তার বাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ওই তরুণের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, তাঁর নাম রাহুল দেব (২১)। তাঁর বাড়ি শিলিগুড়ি থানার পাতি কলোনিতে। তিনি সূর্য সেন কলেজের কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। একটি কল সেন্টারেও কাজ করতেন। রাহুলের বাবা রাজেশবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রিয়াঙ্কা সরকার ও তার বাবা অনিলবাবুকে গ্রেফতার করেছে। প্রিয়াঙ্কা জ্যোৎস্নাময়ী গার্লস হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তাঁরা ভক্তিনগর থানা এলাকার চয়নপাড়ার বাসিন্দা।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্তোষ পাণ্ডে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করা
রাহুল দেব |
হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মৃতের পেটে থাকা খাবারের ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হবে।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়াঙ্কা ও রাহুলের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। দুই পরিবারের সদস্যেরাও তা জানতেন। প্রথমদিকে প্রিয়াঙ্কার পরিবারের লোকজন ওই সম্পর্ক মেনে না-নিলেও সম্প্রতি তাঁর বাবা বিয়েতে রাজি হন। রাহুলের পরিবারের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়। সোমবার প্রিয়াঙ্কাদের বাড়িতে যান রাহুল। দুপুরে সেখানে তিনি ভাত ও সব্জি খান। সেখান থেকে তিনি সন্ধে ৭টা নাগাদ বার হন। সাড়ে ৮টা নাগাদ রাহুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই সময় রাহুলের সঙ্গে কারা ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রাতে প্রিয়াঙ্কা হাসপাতালে অসুস্থ রাহুলকে দেখতেও যান বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। রাহুলের বাবা রাজেশবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ প্রিয়াঙ্কা রাহুলকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। রাহুল সেখানেই খাওয়াদাওয়া করে। সন্ধে সাড়ে ৮টা নাগাদ প্রিয়াঙ্কা নিজের মোবাইল থেকে রাহুলের মাকে ফোন করে। রাহুল বিষ খেয়েছে বলে জানিয়ে সে ফোন বন্ধ করে দেয়। ঘটনার কথা শুনে রাজেশবাবু তাঁর ছেলের মোবাইলে ফোন করে তাঁর অসুস্থতার কথা জানতে পারেন। বাড়িতে ফেরার পথে পাতি কলোনির একটি মাঠের কাছে বসে ছিলেন রাহুল। রাজেশবাবু মাঠে গিয়ে প্রায় বেহুঁশ অবস্থায় রাহুলকে উদ্ধার করে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করান। এ দিন ভোর ৫ টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। |
রাজেশবাবু বলেন, “প্রিয়াঙ্কার বাবা রাজি থাকলেও তার মায়ের বিয়ে নিয়ে আপত্তি ছিল। তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। পরিকল্পিত ভাবে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিয়ে রাহুলকে মারা হয়েছে বলে আমার ধারণা। পুলিশকে সব জানিয়েছি।” অনিলবাবু ও তাঁর মেয়ে অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়। এ দিন যুব কংগ্রেসের তরফে ভক্তিনগর থানায় গিয়ে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি করা হয়। |