প্রায় উনিশ মাস ধরে চলতে থাকা গন্ধেশ্বরী কজওয়ের কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বস্তুত ১৫৩.০৮৬ মিটার লম্বা এই কজওয়ে চালু না হওয়ার জন্য নদীর একপাশে অবস্থিত মৌলাডাঙা, কেশিয়াকোল, বিকনার মত বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষদের প্রায় পাঁচ কিমি ঘুরে বাঁকুড়া শহরে আসতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, এই সমস্ত গ্রামের অধিকাংশ মানুষকেই হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন পরিষেবা ও রুজি রোজগারের টানে নিয়মিত বাঁকুড়া শহরে আসতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় নাকাল হতে থাকা গ্রামবাসীরা দুষছেন পূর্ত দফতরকে। তাঁদের অভিযোগ, “কম শ্রমিক লাগিয়ে অত্যন্ত ধীর গতিতে কাজ চালানো হচ্ছে বলেই এখনও নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়নি।” স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এই কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। |
অসমাপ্ত গন্ধেশ্বরী কজওয়ে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ। |
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ১৫ জুলাই এই কজওয়ে নির্মাণের জন্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই বছরেই অগস্ট মাসেই কজওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যায়। ৯ মাসের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। তাহলে এত দিনেও কেন নির্মাণ কাজ শেষ করা গেল না? পূর্ত দফতরের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বলেন, “গত বর্ষায় নদীতে জল বেড়ে যাওয়ার ফলে নদীর দুই পাড়ের মাটির ক্ষয় হয়েছে। সে কারণে কজওয়ের রূপরেখা সামান্য পরিবর্তন করতে হয়েছে। এই নতুন রূপরেখা অনুযায়ী কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা হাতে পেলেই ফের কাজ শুরু করা যাবে।” তবে কাজ কবে শেষ হবে সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটির সম্পাদক দেবী পালিত কজওয়ে নির্মাণ ঠিক মত না এগোনোর জন্য সরাসরি প্রশাসনকেই দায়ী করছেন। তাঁর অভিযোগ, “পূর্ত দফতরের অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা গন্ধেশ্বরী কজওয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তা চালু না হওয়ার ফলে মানুষের হয়রানির কথা বারবার পূর্ত দফতর-সহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।”
এ দিকে পূর্ত দফতরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এ কে সিংহ-এর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে পূর্ত দফতরের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বলেন, “আগামী মাসেই সেতুটি আমরা চালু করতে পারব বলে আশা করছি।” বাঁকুড়া (সদর) মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর সূত্রে জেনেছি ফান্ডে টাকা কম থাকায় কাজ চালাতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে রয়েছে।” |