ধৃত সিপিএম কর্মী
১৩ বছর আগের ‘অপহরণ’ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ মমতার
প্রায় তেরো বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক তৃণমূল নেতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার রাতে এক সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পচাডহড়া গ্রাম থেকে পুলিশ চন্দ্রনাথ পাত্র নামে ওই সিপিএম কর্মীকে ধরে। ধৃতকে মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর আদালতে হাজির করানো হলে নিখোঁজ ওই তৃণমূল নেতা সুভাষ মণ্ডল পরিবারের লোকেদের
ধৃত সিপিএম নেতা
চন্দ্রনাথ মহাপাত্র।
সঙ্গে তৃণমূলের কর্মীরা তাঁকে ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। বিচারক তাকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। চন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
সুভাষ মণ্ডল কোতুলপুর থানার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। মূলত তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৯৮ সালে তৃণমূল গোপীনাথপুর পঞ্চায়েত সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়। সুভাষবাবু তখন তৃণমূলের গোপীনাথপুর অঞ্চল সভাপতি। তাঁর স্ত্রী মঞ্জু মণ্ডল ১৯৯৯ সালের ৬ নভেম্বর সক্রিয় সিপিএম কর্মী চন্দ্রনাথ-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় তাঁর স্বামীকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। ভোটে হারের ‘আক্রোশেই’ ৫ নভেম্বর বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ থেকে বাড়ি ফেরার পথে জয়পুর থানার বামুনবাঁধ গ্রামে ‘সিপিএমের গুণ্ডাবাহিনী’ সুভাষবাবুকে মোটরবাইকে তুলে পচাডহরার জঙ্গলে নিয়ে যায় বলে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মঞ্জুদেবী। তাঁর ছেলে, কামারপুকুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র অনিমেষও এ দিন দাবি করেন, “সিপিএমের সন্ত্রাস অগ্রাহ্য করে বাবার নেতৃত্বে গোপীনাথপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূল ২০টির মধ্যে ১৭টি আসন পায়। সে জন্যেই সিপিএমের লোকেরা বাবাকে অপহরণ করে।”
অপহৃত তৃণমূল নেতা সুভাষ মণ্ডল। মঙ্গলবার শুভ্র মিত্রের ছবি।
মঞ্জুদেবীর অভিযোগ, “অপহরণের প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলাকে নিয়ে বিষ্ণুপুর আদালতেও অভিযোগ জানাই। পরে সিপিএমের লোকজন হুমকি দিয়ে ওই মহিলাকে চুপ করিয়ে দেন। পুলিশ বাকি দু’জনকে ধরলেও চন্দ্রনাথকে কখনও গ্রেফতার করেনি। ওই দু’জনও পরে ছাড়া পেয়ে যায়। এর পরে সব ধামচাপা পড়ে যায়।” স্বামী মৃত না জীবিত, সে ব্যাপারে তিনি আজও অন্ধকারে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র অবশ্য বলেন, “চন্দ্রনাথ সেই সময় দলের সক্রিয় কর্মী থাকলেও পরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত এ সব করা হচ্ছে।”
গত বছর রাজ্যে পালাবদলের পরে কোতুলপুরের কংগ্রেস বিধায়ক সৌমিত্র খাঁ ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মঞ্জুদেবী সিআইডি-কে দিয়ে পুনর্তদন্তের আর্জি জানান। সৌমিত্রবাবু বিষয়টি বিধানসভায় তোলেন। পরে অনিমেষকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়া জেলা পুলিশকে অভিযোগের বিশদ তদন্তের নির্দেশ দেন। গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ এস এস চক্রবর্তী পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানান। দ্রুত তদন্ত-রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে এক জনকে ধরেছি। বাকিদের সন্ধান চলছে।” চিঠি পাওয়ার প্রায় ছ’মাস পরে কেন ধরা হল চন্দ্রনাথকে? পুলিশ সুপার মন্তব্য করতে চাননি। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, গোড়া থেকে সমস্ত জেনে নতুন করে তদন্ত হওয়ায় সময় লেগেছে।
বিধায়ক সৌমিত্র খাঁ ও কোতুলপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিমাই ঘোষের মন্তব্য, “আশা করি, অনিমেষরা এ বার সুবিচার পাবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.