সুশান্ত দলের হোলটাইমার নন, আদালতে হলফনামা বিমানের
প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ সিপিএমের ‘হোলটাইমার’ বা ‘সর্বক্ষণের কর্মী’ নন। এমনকী, দল থেকে তিনি কোনও ভাতাও পান না। তিনি স্বেছা-কর্মী। দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু মঙ্গলবার হলফনামা দিয়ে আলিপুরের বিশেষ আদালতকে এই তথ্য জানালেন। এ দিন বিচারক কৃষ্ণা পোদ্দারের এজলাসে বিমানবাবুর তরফে ওই হলফনামা পেশ করে তাঁর আইনজীবী (যিনি সুশান্তবাবুরও আইনজীবী) সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সুশান্তবাবু বিধায়ক হিসেবে বিধানসভা থেকেই ভাতা পান। দল থেকে ভাতা পান না। দলকে তিনি ‘লেভি’ও দেন না।
আদালতে মুখ্য পাবলিক প্রসিকিউটার শ্যামাদাস গঙ্গোপাধ্যায় পাল্টা জানান, বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সুশান্তবাবু নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা দিয়ে যে তথ্য জানান, তার সঙ্গে দলের রাজ্য সম্পাদকের হলফনামায় দেওয়া তথ্যের সঙ্গতি নেই। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি বিবেচনার ভার তিনি আদালতের ওপর ছেড়ে দেন। আদালত এ দিন সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে। তিনি সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী কি না, সে প্রশ্নের জবাবে পরে সুশান্তবাবু বলেন, “আদালতে হলফনামায় যা বলা হয়েছে, আমি তাই।” সুশান্তবাবু সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পার্টি সদস্যকে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হতে গেলে তাঁকে সর্বক্ষণের কর্মী হতে হয়। জেলে যাওয়ার সময়ে সুশান্তবাবু জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
সিপিএমের কোনও নেতা-কর্মী হোলটাইমার বা সর্বক্ষণের কর্মী হলে মন্ত্রী, বিধায়ক বা সাংসদ হিসাবে তাঁর ভাতার পুরো টাকাই দলকে ‘লেভি’ হিসাবে নেওয়ার রেওয়াজ। পরিবর্তে দল ওই নেতা-কর্মীকে সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে মাসিক আড়াই-তিন হাজার টাকা ভাতা দেয় এবং তাঁর চিকিৎসার খরচ বহন করে। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও তাঁর বেতনের পুরো টাকাই দলকে দিয়ে দিয়ে হত। পরিবর্তে তিনি তুলনায় অনেক কম টাকা ভাতা পেতেন। সীতারাম ইয়েচুরি থেকে শ্যামল চক্রবর্তী দলের যে সব সাংসদ সর্বক্ষণের কর্মী, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। এমনকী, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও তাঁর বিধায়ক ভাতার পুরো টাকাই দলকে দিয়ে দেন। পরিবর্তে তিনি সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে ভাতা পান। বিমানবাবুর পেশ করা হলফনামায় কিন্তু এর ঠিক উল্টো কথাই বলা হয়েছে। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, “কমিউনিস্ট পার্টির কে হোলটাইমার, কে কত লেভি দেন বা ভাতা পান, তার পুরোটাই গোপনীয়। তাই দলের পক্ষ থেকে আদালতে যা পেশ করা হবে, সেটাই গ্রহণযোগ্য হিসাবে ধরে নিতে হবে।” সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার তদন্তে কলকাতা পুলিশের আবেদন অনুযায়ী আলিপুরের বিশেষ আদালত আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে দলের সদর দফতরে নোটিস পাঠায় ও সুশান্তবাবু সম্পর্কে তথ্য পাঠাতে বলে। সরকারি আইনজীবী প্রণবেশ মণ্ডল জানান, ওই বিধায়ক দলের সর্বক্ষণের কর্মী কি না, দল তাঁকে কত ভাতা দেয়, দলকে তিনি কত ‘লেভি’ দেন, কী তার নিয়মকানুন, সেই সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বলা হয়েছিল। পার্টি কংগ্রেসের জন্য ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে কয়েক মাস সময় নেওয়ার পর দলের তরফে হলফনামা পেশ করে ওই তথ্য জানানো হয়।
সুশান্তবাবুর আইনজীবী সঞ্জীববাবু আদালতকে জানান, ২০১০ সালে অডিট হয়ে গিয়েছে। সেই কাগজপত্রের অস্তিত্ব নেই। সুতরাং সে সব কাগজপত্র দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তা ছাড়া, ২০১১ সালে যেহেতু সুশান্তবাবুর ব্যাঙ্ক আকাউন্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাই সে সব কাগজপত্রও দেওয়া যাচ্ছে না। ওই সময় সুশান্তবাবু বিধায়ক হিসেবে বিধানসভা থেকে ভাতাও তুলতে পারেননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.