হলদিয়ার জেলেই ঠাঁই হল লক্ষ্মণের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও কলকাতা |
টানা ১০ দিন সিআইডি হেফাজতের পর এ বার ১৪ দিন জেল-হেফাজতের নির্দেশ হল লক্ষ্মণ শেঠ, অশোক গুড়িয়া, অমিয় সাউদের। একদা তাঁর ‘খাসতালুক’ হলদিয়ার সাবজেলেই ঠাঁই হল দুই সঙ্গী সমেত লক্ষ্মণবাবুর।
নন্দীগ্রাম নিখোঁজ-কাণ্ডে অভিযুক্ত এই তিন সিপিএম নেতাকে মঙ্গলবার হলদিয়া আদালতে হাজির করানো হয়। সিআইডি এ দিন ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে রাখার আর্জি জানায়নি। লক্ষ্মণবাবুদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলেও জেল-হেফাজতের নির্দেশ দেন এসিজেএম সর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায়। এ দিনই কলকাতা হাইকোর্ট নিখোঁজ-কাণ্ডে অভিযুক্ত নন্দীগ্রামের সাউদখালির দুই ‘ফেরার’ সিপিএম কর্মী শঙ্কর কর ও রবিন ভুঁইয়ার আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে। তাঁদের গ্রেফতার করার মতো যথেষ্ট ‘কারণ’ সিআইডি-র চার্জশিটে নেইএই মন্তব্য করে বিচারপতি অসীম রায় ও অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ আগাম জামিন মঞ্জুর করে। |
|
হলদিয়া আদালত থেকে জেলের পথে লক্ষ্মণ। |
১৭ মার্চ মুম্বই থেকে লক্ষ্মণবাবুদের গ্রেফতার করে সিআইডি। ২০ মার্চ হলদিয়া আদালতে হাজির করানো হয়। ‘ট্রানজিট রিমান্ডে’ এনেও দু’দিন বাদে আদালতে হাজির করানোর ঘটনায় সিআইডি ‘নিয়ম-বিরুদ্ধ’ কাজ করেছেন বলে গত শুক্রবারই আদালতে প্রশ্ন তোলেন লক্ষ্মণবাবুদের আইনজীবীরা। এই মামলার তদন্তদলের নেতৃত্বে থাকা সিআইডি-র ডিএসপিকে ১০ এপিলের মধ্যে ‘আইনানুগ ব্যাখ্যা’ পেশ করার নির্দেশ এ দিন দেন এসিজেএম।
রবি ও সোমবার অশোক গুড়িয়া, অমিয় সাউদের নিয়ে সিআইডি-দল পাঁশকুড়া, নন্দীগ্রাম, খেজুরিতে তল্লাশি চালায়। ‘গুরুত্বপূণর্’ কিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি সিআইডি-র। যদিও নথিপত্র-উদ্ধার ‘সাজানো’ দাবি করে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের অভিযোগ, অযথা হয়রান করা হচ্ছে তিন নেতাকে। দুপুরে আদালতের গেটে অভিযুক্তদের ‘শাস্তি’র দাবিতে এক দফা বিক্ষোভ হয়। তার আগেই কলকাতা থেকে আনা হয়েছিল লক্ষ্মণবাবুকে। পরে তিন অভিযুক্তকে যখন কোর্ট-লকআপ থেকে এজলাসে আনা হচ্ছিল, সে সময়েও দূরে বিক্ষোভ হয়। বিকেলে তিন নেতাকে অন্য গেট দিয়ে জেলের উদ্দেশে পাঠানো হয়। |
|
হলদিয়া আদালত থেকে জেলের পথে সিপিএম নেতা
অমিয় সাউ (বাঁ দিকে) ও অশোক গুড়িয়া (ডান দিকে)। |
তার আগে লক্ষ্মণবাবুর স্ত্রী, হলদিয়ার পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডাশেঠ কোর্ট-লকআপে গিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি লক্ষ্মণবাবুর সুগারের সমস্যা বাড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
লক্ষ্মণবাবুদের জেরা করে তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে সিআইডি সূত্র জানাচ্ছে, খেজুরি ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিশেষ কয়েক জন ‘ফেরার’ সিপিএম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করাই এখন তদন্তদলের প্রধান লক্ষ্য। খেজুরির হিমাংশু দাস, বিজন রায় ও সুভাষ মাইতি এবং গড়বেতার তপন ঘোষ-সুকুর আলিকে ধরতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ও রাজ্যের বাইরেও ‘জাল’ পাতা হয়েছে বলে দাবি সিআইডি-র। কয়েক দিনের তদন্তে সুভাষ মাইতির ভূমিকা নিয়ে বিশদ তথ্য মিলেছে ও এই সুভাষ নন্দীগ্রামের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নিহত সমর্থকদের দেহ লোপাটে ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ নেন বলে তদন্ত-দলের দাবি।
|
ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
|