দ্রুত নগরায়ণের জেরেই ক্রমশই সঙ্কুচিত হচ্ছে বনভুমি। নিজেদের স্বাভাবিক চারণভূমি হারিয়ে খিদের জ্বালায় বনের পশু ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। কখনও তাদের আক্রমণে মারা পড়ছে মানুষ। আবার কখনও পশুরাও জীবন হারাচ্ছে ক্রুদ্ধ জনতার গণপিটুনিতে। চলতি বছরেরর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস অবধি, গুয়াহাটি শহরে ও আশপাশে মানুষ-চিতাবাঘের ধারাবাহিক সংঘাত আক্ষরিক অর্থেই অভূতপূর্ব। এই সমস্যার মোকাবিলায় অসম সরকার যে বিশেষ কমিটি গড়েছিল দু’-একদিনের মধ্যেই সেই কমিটি বনমন্ত্রীর কাছে তার রিপোর্ট পেশ করবে।
কী সুপারিশ থাকছে সেই রিপোটে? আভাস মিলেছে, পাহাড়-জঙ্গলে জবরদখল বন্ধ করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাড়তে থাকা চিতাবাঘের হানা সামলাতে গুয়াহাটি শহর ও তার আশপাশের ১৮টি পাহাড়ে স্থায়ী বনশিবির গড়ছে বন দফতর। সেই সঙ্গে এই প্রথমবার বিজ্ঞানসম্মত ভাবে চিতাবাঘের সুমারি হবে এখানে। পাশাপাশি, চিতাবাঘের আক্রমণের ঘটনা হলে, ‘হেল্পলাইন’ চালু করার কথাও ভাবছে বন দফতর।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সুরেশ চাঁদ জানান, আইন মোতাবেক ১৩-১২-২০০৫ তারিখের পরে অরণ্যে বসতি করা মানুষের পাট্টা পাওয়ার কোনও অধিকার নেই। কিন্তু নেতা ধরে পাট্টা বাগানোর আশায়,সমানে পাহাড়ের জমি দখল করা চলছে। চাঁদ বলেন, “গাছ সাফ করে নিজেদের পায়েই আমরা কুড়ুল মারছি। জালুকবাড়ি, গোটানগর, ফাটাশিল, গড়ভাঙা, কালাপাহাড়, সরনিয়া, হেঙরাবাড়ি, আমসাং-এ অরণ্যরক্ষা ও জবরদখল আটকানোর জন্য স্থায়ী শিবির বসানো হবে।” এই বনকর্তার অভিমত, “ঘুম পাড়ানি গুলি ছোঁড়া, নিয়ম মতে, শেষ পদক্ষেপ হওয়া উচিত। প্রাণী আইনে, এটি হত্যার চেষ্টার সামিল। চিতাবাঘকে নিজের মতো বের হতে দেওয়াই ভাল।”
চাঁদের অভিযোগ, চিতাবাঘ ধরা পড়ার পরে, টিভিতে মুখে দেখানোর লোভে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে যাচ্ছেন। ফলে, ঘুম পাড়ানি গুলি ছোঁড়া, চিতাবাঘকে উদ্ধার করার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এ জন্য বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ জানান চাঁদ। |