নিজস্ব সংবাদদাতা • হরিপাল |
নিজের এক সময়ের ‘খাসতালুক’-এই আক্রান্ত হলেন সিপিএমের হরিপাল জোনাল কমিটির সম্পাদক দুলাল ভৌমিক। তাঁর গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে হরিপালের পশ্চিম গোপীনাথপুরের ধারামল্লপুর গ্রামে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাই তাঁর উপর হামলা চালায় বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন দুলালবাবু। তৃণমূল এবং গ্রামবাসীদের একাংশের অবশ্য দাবি, সিপিএমের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই দুলালবাবু মার খেয়েছেন।
এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ ধারামল্লপুরের বাসিন্দা, সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান কাশীনাথ ঘোষের বাড়িতে গিয়েছিলেন দুলালবাবু। তাঁর বক্তব্য, “কাশীনাথবাবু অসুস্থ। শয্যাশায়ী। তাঁকে দেখতেই গিয়েছিলাম। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ সেখান থেকে মোটর বাইকে চেপে ফিরছিলাম। গ্রামে এসেছি বুঝতে পেরে কয়েক জন যুবক রাস্তার ধারে অপেক্ষা করছিল।” অভিযোগ, তারা দুলালবাবুর পথ আগলায়। তিনি মোটর বাইক থামালে ওই যুবকেরা তাঁর উপরে চড়াও হয়। ওই সিপিএম নেতার দাবি, “আক্রমণকারীরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী। মদ্যপ অবস্থায় ছিল। আমার বাইক ভাঙচুর করে। কিল-চড়, ঘুষি মারতে থাকে। পকেট থেকে আড়াইশো টাকা ছিনতাই করে। গ্রামবাসীরা এসে আমাকে উদ্ধার করে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “ওরা বলছিল, আমাকে অঞ্চলে ঢুকতে দেবে না। সেই কথা লিখে দিতে বলছিল। দিকে দিকে তৃণমূল সিপিএম নেতা-কর্মীদের উপর এমন অত্যাচার করছে।”
সিপিএমেরই একটি সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, কাশীনাথবাবুর বাড়িতে ৪-৫টি মোটর বাইকে চেপে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন দুলালবাবু-সহ সিপিএমের কয়েকজন নেতা-কর্মী। ওই গ্রামে ২০০৬ সালে খুন হয়েছিলেন বাপি খাঁ এবং বিশ্বনাথ সোরেন নামে দুই গ্রামবাসী। ওই দু’জনের পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় কিছু গ্রামবাসী মিলেই এ দিন দুলালবাবুর উপর চড়াও হন। নিহত বাপি খাঁয়ের জ্যাঠামশাই আজহার খাঁয়ের অবশ্য দাবি, “ওঁকে মোটেই মারধর করা হয়নি। অশান্তি ছড়াতে উনি গ্রামে ঢুকেছিলেন। আমরা প্রশ্ন করতে পালাতে গিয়ে পড়ে যান। এখন মিথ্যে গল্প ফাঁদছেন। ওঁদের জন্যই ভাইপোকে খুন হতে হয়েছিল।”
এক সময়ে সিপিএমের কর্মী ছিলেন আজহার। তাঁর বক্তব্য, “পার্টিতে সুবিচার পাইনি। ভাইপো খুন হয়ে যাওয়ায় পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা, চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দল। তা-ও করেনি। উল্টে আমার নামে আদালতের সমন পাঠায়। এর পরে সিপিএম ছেড়ে দিই।” দুলালবাবু শয্যাশায়ী পার্টিনেতাকে দেখতে যাওয়ার কথা বললেও আজহারবাবুদের দাবি, কাশীনাথবাবু আদপেই শয্যাশায়ী নন। এ দিনও তিনি এলাকায় চায়ের দোকানে বসে গল্পগুজব করেছেন। গোপন বৈঠক করতেই ওই বাড়িতে এসেছিলেন দুলালবাবুরা। |