|
|
|
|
ইতালীয়কে নিয়ে কথা এগোল কিছুটা |
মাওবাদীদের ৭ শর্তে ঘোর চাপে নবীন |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ওড়িশায় মাওবাদীদের হাতে বন্দি ইতালীয় পর্যটক পাওলো বোসুস্কোর মুক্তি নিয়ে কথা খানিক এগোলেও অপহৃত বিধায়ক ঝিনা হিকাকার মুক্তি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। বিজেডি বিধায়ক বন্দি রয়েছেন ওড়িশা-অন্ধ্র সীমানায় সক্রিয় রামকৃষ্ণন-দয়া গোষ্ঠীর হাতে। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক আজ বলেন, “বিধায়কের মুক্তির জন্য মাওবাদীরা সাতটি শর্ত পাঠিয়েছে। সেগুলি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের বিধায়ক যাতে ঠিকভাবে ফিরে আসতে পারেন, সে জন্য সব রকম চেষ্টাই করা হবে।” নবীন আরও বলেন, “মাওবাদীরা হুমকি দিয়েছে যেন বেশি সময় না কেনা হয় এবং কোনও পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়। তাতে ফল হবে মারাত্মক। মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে কথা বলতেও রাজি নয় ওরা।”
মাওবাদীদের মাধ্যমেই অপহৃত বিধায়ক ঝিনা রাজ্য সরকারের কাছে আজ আবেদন জানিয়েছেন, মাওবাদীদের শর্তগুলি যেন অবিলম্বে মেনে নিয়ে তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়। মাওবাদী ডেরায় এখনও পর্যন্ত তিনি অক্ষত আছেন বলেই জানিয়েছেন ঝিনা।
শর্তগুলি হাতে পেয়েই আজ সকালে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন নবীন। সাত দফা শর্তে কী বলা হয়েছে? প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, মাওবাদীদের দাবিগুলি হল:
• এখনই ‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’ বন্ধ করতে হবে।
• কোরাপুট, মালকানগিরি ও ব্রহ্মপুরের জেলে বন্দি আদিবাসী ও মাওবাদীদের মুক্তি দিতে হবে।
• জঙ্গলে পুলিশের তল্লাশি অভিযান বন্ধ করতে হবে।
• জঙ্গলে গোয়েন্দাদের আনাগোনাও বন্ধ করতে হবে।
• গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মালকানগিরির কালেক্টর বিনীল কৃষ্ণের মুক্তির সময়ে যে সব শর্ত মৌখিক ভাবে মেনে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলি বাস্তবে করে দেখাতে হবে।
• মাওবাদী-দমন অভিযানের নামে আদিবাসীদের উপর অত্যাচার চালানো যাবে না।
• ঝিনার মুক্তি চেয়ে বিক্ষোভ-মিছিল চালানো হচ্ছে, সেগুলি বন্ধ করতে হবে।
ইতালীয় পাওলো বোসুস্কোর মুক্তি নিয়ে কিছুটা আশার আলো দেখছেন নবীন। তিনি বলেন, “আলোচনা চলছে। সমাধানসূত্র শীঘ্রই বেরিয়ে আসবে আশা করা যায়।” সব্যসাচী পণ্ডা গোষ্ঠীর দাবি মেনে জঙ্গলে সেনা অভিযান বন্ধ করতে রাজি হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মাওবাদীরা যদি হিংসা থেকে বিরত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে এখন আর কোনও কঠিন পদক্ষেপ করা হবে না। পাশাপাশি, মাওবাদী সমর্থিত চাষি মূলিয়া সঙ্ঘের ৮৩ জন কর্মীর উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার কথাও বিবেচনা করছে সরকার। মাওবাদীদের সম্মতিতেই সমস্যার সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন দুই মধ্যস্থতাকারী বি ডি শর্মা ও দণ্ডপাণি মহান্তি।
ঝিনা অপহরণ নিয়ে আজও বিধানসভায় সরব হয় বিরোধী কংগ্রেস। তারা বলে, নবীন সরকার আজ যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে, তার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মাওবাদীদের শাখা সংগঠন চাষি মূলিয়া সঙ্ঘের সঙ্গে কয়েকটি গোপন বোঝাপড়া হয়েছিল বিজেডি-র। কিন্তু ভোটে জিতে যাওয়ার পর বিজেডি সে সব বেমালুম ভুলে যাওয়ার কারণেই ক্ষিপ্ত হয়েছে মাওবাদীরা। এর প্রতিশোধ নিতেই তারা অপহরণ করেছে বিধায়ককে। |
|
|
|
|
|