|
|
|
|
হত ১২ সিআরপি |
দন্তেওয়াড়ার স্মৃতি উস্কে বাস উড়ল গড়ছিরৌলিতে |
সংবাদসংস্থা • গড়ছিরৌলি (মহারাষ্ট্র) |
ফের মাওবাদীদের নিশানায় গড়ছিরৌলি!
সন্দেহভাজন মাওবাদীদের পেতে রাখা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে উড়ে গেল সিআরপি জওয়ান-বোঝাই একটি বাস। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে মহারাষ্ট্রের গড়ছিরৌলি জেলার পুশতোলায়। ওই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন ১২ জন সিআরপি জওয়ান। গুরুতর জখম ২৮ জন। ঘটনাচক্রে মহারাষ্ট্র সফরে এ দিন সকালেই নাগপুর থেকে গড়ছিরৌলি এসেছেন সিআরপিএফ প্রধান কে বিজয় কুমার। তার কিছু পরেই ওই বিস্ফোরণ ঘটে। খবর পেয়েই বিজয় কুমার ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেন বলে সিআরপিএফ সূত্রে খবর।
পরে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আর পাটিল জানান, সিআরপি প্রধানের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন রাজ্যের মাওবাদী-দমন শাখার প্রধান ভি ডি মিশ্র। সিআরপি প্রধানই ফোন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব আর কে সিংহকে ঘটনার কথা জানান। বছর দুয়েক আগে, ২০১০ সালের এপ্রিলে ছত্তীসগঢ়ের দন্তেওয়াড়ায় একই ভাবে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৭৫ জন সিআরপি জওয়ান নিহত হন।
সিআরপি প্রধানের গড়ছিরৌলি পৌঁছনোর দিনেই এই বিস্ফোরণে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। কারণ মঙ্গলবার যেখানে বিস্ফোরণ ঘটে, ছত্তীসগঢ় ও অন্ধ্রপ্রদেশের সীমানা সংলগ্ন সেই গড়ছিরৌলি একাধিক বার মাওবাদী হামলার শিকার হয়েছে।
এখানেই ২০০৯-এ মাওবাদী হানায় নিহত হয়েছিলেন ১৭ জন। ২০১১ সালেও গড়ছিরৌলিতে মাওবাদী হামলায় চার পুলিশকর্মী নিহত হন। তার পরেও যে মহারাষ্ট্রের কিছুটা এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাওবাদীদের কর্তৃত্ব কমানো যায়নি, মঙ্গলবারের বিস্ফোরণ সে কথাই বুঝিয়ে দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
মঙ্গলবারের হামলা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে মাওবাদী দমনে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে প্রশাসনিক সাফল্য নিয়েও। প্রস্তাবিত জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যে এই হামলায় ফের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি এই হামলার প্রতিবাদ করে মাওবাদী দমনে জাতীয় স্তরে একজোট হয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। এই ব্যাপারে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন কংগ্রেস মুখপাত্র। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইউপিএ সরকারের কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে মণীশের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
সিআরপি সূত্রের খবর, এ দিন ১৯২ ব্যাটেলিয়নের ‘ডি’ কোম্পানির ৪০ জওয়ানকে নিয়ে পুশতোলা থেকে গাট্টা যাচ্ছিল একটি বাস। সেটি পুশতোলা ছাড়ার কিছু পরেই বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১২ জন। বাকিরাও গুরুতর জখম হন। পুলিশের দাবি, হামলায় বেশ কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দাও জখম হয়েছেন। বিস্ফোরণের খবর প্রথম আসে রাজ্যের আইজি (অপারেশনস) সুনীল রামানন্দের দফতরে। তবে দুর্ঘটনাস্থল প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজে প্রথমে সমস্যা হচ্ছিল। পরে সেনাবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার গিয়ে জওয়ানদের উদ্ধার করে, মৃতদেহগুলিও হাসপাতালে আনা হয়। ঘটনাস্থলে সিআরপি এবং মাওবাদী দমন শাখার জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাটিলের কথায়, “কী ভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কতা ঠিক ভাবে নেওয়া হয়েছিল কি না, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তিনি জানান, জখমদের মধ্যে আট জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের নাগপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জখম বাকি জওয়ানরা গড়ছিরৌলির হাসপাতালে ভর্তি। সিআরপিএফ এবং মাওবাদী-দমন শাখার প্রধানেরা দেখাও করে এসেছেন জখম জওয়ানদের সঙ্গে। |
|
|
|
|
|