বিভিন্ন মাপের বিমান রক্ষণাবেক্ষণ ও সারাই-এর জন্য কলকাতায় কারখানা গড়তে চায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের চৌহদ্দির ভিতরে নারায়ণপুর লাগোয়া জমির একটি নকশা এ জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এ বার বাজেটে বিমানের যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছেন। বস্তুত, তার পরেই নড়েচড়ে বসেছেন কর্তৃপক্ষ। চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল বলেন, “বিমান কারখানার জন্য যন্ত্রাংশ আমদানি করতেই এত দিন অনেক খরচ পড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি বদলেছে। একটা কারখানা করতে বড়জোর ৩-৪ একর জমির প্রয়োজন। কলকাতায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে ১৬৭০ একর জমি।” এই কারখানা যদিও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বানাবে না। তারা শুধু জমি ভাড়া দেবে। কিন্তু, বেদপ্রকাশের মতে, বাজেটে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণার পরে অনেক সংস্থাই কারখানা গড়তে এগিয়ে আসবে। তখন কলকাতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের অন্যতম অগ্রণী দেশ। গত কয়েক বছর ধরে বিমান নির্মাতা সংস্থাগুলি সব চেয়ে বেশি বরাত পেয়েছে ভারত থেকে। ভারতীয় সংস্থাগুলির হাতে এখন প্রচুর বিমান। বেদপ্রকাশের কথায়, “রক্ষণাবেক্ষণ ও সারাইয়ের জন্য এখনও আমাদের ৬০-৭০% বিমানকে দুবাই অথবা মালয়েশিয়া যেতে হয়। এই সুযোগ ভারতে পাওয়া গেলে সুবিধা হবে।”
বেদপ্রকাশ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই হায়দরাবাদ, নাগপুর, মুম্বই-এ বিমান সারাইয়ের কারখানা তৈরি হয়েছে। হায়দরাবাদে জিএমআর সংস্থার সঙ্গে কারখানা গড়ছে মালয়েশিয়া বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। মুম্বইয়ে এয়ারওয়ার্কস ইন্ডিয়া নামে একটি সংস্থা কারখানা বানিয়েছে।
নাগপুরে বোয়িং ও এয়ার ইন্ডিয়া মিলে কারখানা গড়ছে। বেদপ্রকাশ বলেন, “কলকাতা-সহ অন্য বিমানবন্দরগুলিতে এই কারখানা হলে বিদেশ থেকেও বিমান আসবে সারাইয়ের কাজ করাতে।”
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা জানিয়েছেন, এখানে বিমানবন্দর ঘিরে দু’টি স্তরের পাঁচিল রয়েছে। প্রথম পাঁচিলটি রয়েছে ‘অপারেশন এরিয়া’ (যেখান থেকে বিমান ওঠানামা করে) ঘিরে। বাইরে আরও একটি পাঁচিল রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পাঁচিলের মধ্যবর্তী জমি এত দিন পড়ে ছিল।
এখন দ্বিতীয় ওই পাঁচিলটিকে শক্তপোক্ত করার কাজ চলছে। অধিকর্তার কথায়, “কিছু এলাকা জুড়ে থাকা নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে। ওখানে কারখানা হলে বেশ কিছু পরিকাঠামো গড়ার প্রয়োজন। রানওয়ে থেকে বিমানকে কারখানায় পৌঁছে দিতে ট্যাক্সিওয়ে বানাতে হবে। বিমান রাখার জন্য ‘হ্যাঙ্গার’-ও বানাতে হবে। এ সব নিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে চিঠি লেখা হয়েছে।” |