রাজ্যে ‘পরিবর্তন’ হয়েছে। এলাকার বিধায়ক শাসকদলেরই। তা সত্ত্বেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন না সালানপুর ও বারাবনির বিস্তীর্ণ অংশের মানুষ।
সবে গরম পড়ছে। এরই মধ্যে সালানপুরের ১১টি পঞ্চায়েত এবং বারাবনি ব্লকের ৮টি পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ অঞ্চলেই পানীয় জলের সঙ্কট প্রবল। সালানপুরের ভাগরান, মহিষামুড়া, মাধাইচক, মুচিপাড়া, ডাবর, কল্যা এবং এথোড়া ও সামডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু অংশে সঙ্কট লাগামছাড়া। গরমের শুরুতেই পুকুর শুকিয়ে যায়। কুয়োর জলও থাকে না। স্থানীয় বাসিন্দা অমল মজুমদার বলেন, “সালানপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধসপ্রবণ। মাটির নীচের অংশ ফাঁকা। এই অবস্থায় গভীর নলকূপ খুঁড়েও জলের স্তর মেলে না। গভীর কুয়ো খুঁড়েও জল মেলে না। বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয়।” |
গরম বাড়ার সঙ্গেই বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়বে, সন্দেহ নেই। ফলে, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কলের উপরেই ভরসা। কিন্তু তা-ও এত কম যে ন্যূনতম দু’কিলোমিটার হেঁটে পানীয় জল বয়ে আনতে হয়। একই অবস্থা বারাবনি ব্লকের ৮টি পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ গ্রামের। স্থানীয় মাজিয়ারা, ভানোড়া গ্রাম, পুচরা, কেলেজোড়া, চরণপুর, বেলডাঙার মতো বেশ কিছু এলাকায় জলসঙ্কট তীব্র। স্থানীয় বাসিন্দা মনোজ চক্রবর্তীর অভিযোগ, “যে এলাকা দিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের পাইপ গিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দারা পাইপ ফাটিয়ে পাম্পের সাহায্যে জল টেনে নিচ্ছেন। ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা নির্জলা থাকছেন।” সালানপুর ও বারাবনিতে ইসিএলের প্রচুর জলভর্তি পরিত্যক্ত খোলামুখ কয়লা খাদান আছে। পাম্পের সাহায্যে সেই জল তুলে পরিশ্রুত করে সরবরাহের দাবিও তুলেছেন বাসিন্দারা। সালানপুরের আলকুষায় ও বারাবনির ইটাপাড়ায় এই রকম দু’টি প্রকল্প বছর দুই আগে চালু হয়। তাতে কয়েক হাজার গ্রামবাসী উপকৃত হয়েছেন। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের মতেও, “আরও কিছু পরিত্যক্ত খাদান থেকে জল তুলে সরবরাহ করার জন্য কয়েকটি প্রকল্প বানানো প্রয়োজন। তাতে সঙ্কট অনেকটা কমবে।”
জলসঙ্কটের সমাধান যেমন হয়নি, মেটেনি বারাবনি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার মধ্যে কলেজ গড়ার দাবিও। ঝাড়খণ্ডের সীমানা ঘেঁষা চিত্তরঞ্জনে একটি কলেজ আছে। সেখানে মূলত রূপনারায়ণপুর, চিত্তরঞ্জন এবং ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম ও জামতাড়া অঞ্চলের পড়ুয়ারাই পড়াশোনার সুযোগ পান। যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন না থাকায় বারাবনির ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়তে যেতে পারেন না। বাধ্য হয়ে তাঁদের আসানসোল, রানিগঞ্জ, কুলটির কলেজে যেতে হয়। পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলোর ব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে ক্ষোভ। গোটা এলাকায় বড় মাঠ বা উপযুক্ত স্টেডিয়াম নেই। |
চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার স্টেডিয়ামগুলি সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য নয়। ও দিকে, রূপনারায়ণপুর কেব্লস কারখানার স্টেডিয়াম পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, তাঁরা নিজেরাই জামগ্রাম অঞ্চলে একটি মাঠ পরিষ্কার করে খেলাধুলোর ব্যবস্থা করেছেন। তাঁদের দাবি, একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হোক। বিধায়কের দাবি, এই সব সমস্যা নিয়েই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। যদিও তাতে আখেরে কাজ কী হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
|
তপ্ত প্রহর। দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারে আগুনের খণ্ডচিত্র। মঙ্গলবার ছবিগুলি তুলেছেন বিকাশ মশান। |