জতুগৃহ বেনাচিতিতে পুড়ে ছাই হল বেকারি
গুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বেনাচিতির একটি পুরনো বেকারি। মঙ্গলবার দুপুরে এই আগুন লাগে। দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন বেকারি কর্তৃপক্ষ। তবে দমকলের ওসি নিতাই চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কী ভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ আগুন লাগে ওই বেকারিতে। তখন ভিতরে কাজ করছিলেন জনা ছয়েক কর্মী। প্রাথমিক ভাবে তাঁরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিতরে প্রচুর দাহ্যবস্তু থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের আঁচে জখম হন বেকারির দুই কর্মী। খবর দেওয়া হয় দমকলে। প্রথমে সিটি সেন্টার থেকে রাজ্য দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। নাচন রোড থেকে প্রায় দেড়শো মিটার ভিতরে রয়েছে এই বেকারিটি। রাস্তা সরু হওয়ার কারণে দমকলের ইঞ্জিন খানিকটা এগিয়েই আটকে যায়। সেখান থেকে পাইপ দিয়ে জল ছেটাতে থাকেন দমকলকর্মীরা। কিন্তু তাতে আগুনের তীব্রতা না কমায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা থেকে আরও দু’টি ইঞ্জিন আসে। বেকারির পিছন দিকে একটি পুকুর থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ আগুন পুরোপুরি আয়ত্তে আসে। তার পরে আরও মিনিট কুড়ি অপেক্ষা করে দমকলের ইঞ্জিনগুলি ফিরে যায়।
পাঁউরুটি তৈরির এই যন্ত্রেই বিস্ফোরণ? নিজস্ব চিত্র।
বেনাচিতিতে আগুন লাগার ঘটনা এই প্রথম নয়। বছর ছয়েক আগেই বেনাচিতি বাজার এলাকায় আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল প্রায় কুড়িটি দোকান। দমকলের তরফে জানানো হয়, বেনাচিতির নানা বাজার এলাকায় পলিথিনের ছাউনি ও বিদ্যুতের প্রচুর তার থাকার কারণে আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। বাজার এলাকাগুলির রাস্তা অপিরসর হওয়ায় আগুন নেভাতে গিয়েও সমস্যায় পড়ে দমকল।
এই বেকারির মালিক হাজি মহম্মদ ইসরাফিল খান জানান, ১৯৫৬ সালে বেনাচিতিতে বেকারি গড়েন তিনি। তখন এলাকায় জনবসতি বিশেষ ছিল না। প্রথমে বেকারির পাশে একটি ঘরে সপরিবারে থাকতেন তিনি। পরে দোতলা বাড়ি গড়ে তোলেন। বর্তমানে বেকারির কাজকর্ম দেখেন তাঁর ছেলে আমির আলি। তিনি জানান, এ দিন তিনি দুপুরের খাওয়া সেরে কাজে বেরোচ্ছিলেন। হঠাৎ আগুন লাগার খবর পেয়ে বেকারিতে পৌঁছন। প্রথমে কর্মীরাই আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন। কিন্তু আঁচে দুই কর্মী ইরফান খান এবং ইসরাফ খান জখম হওয়ায় সকলে বেরিয়ে আসেন। এর পরেই দমকলে খবর দেওয়া হয়। জখম কর্মীদের নার্সিংহোমে পাঠানো হয়।
মিনিট পনেরোর মধ্যে দমকলের একটি ইঞ্জিন চলে আসে। পরিবারের সদস্যদের বাড়ির বাইরে বের করে আনেন আমির আলি। ঘণ্টাখানেক পরে যখন আগুন আয়ত্তে আসে, তত ক্ষণে বেকারিটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। জনবসতি এলাকায় বেকারিতে আগুন লাগায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আশপাশের বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা সেন্টু সাহা, গৌতম রায়েরা জানান, বিস্ফোরণের একটি শব্দ শুনে তাঁরা বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে পাশের পুকুর থেকে জল নিয়ে দমকল দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলায় তা আর ছড়াতে পারেনি। বিকেল ৪টে নাগাদ ঘটনাস্থলে যান ডেপুটি মেয়র তথা আমরাই গ্রামের বাসিন্দা শেখ সুলতান।
বিকেলে পুড়ে যাওয়া বেকারির পাশে বসেছিলেন হাজি মহম্মদ ইসরাফিল খান। তিনি জানান, ২০০২ সালে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র লাগানো হয় বেকারিতে। পাঁচ দশকেরও বেশি পুরনো বেকারি এ ভাবে চোখের সামনে পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি রীতিমতো হতাশ। তাঁর কথায়, “কী ভাবে যে কী হয়ে গেল, কিছু বুঝতে পারছি না।” তাঁর ছেলে আমির আলি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে।” দমকলের তরফে জানানো হয়, তদন্ত চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.