উত্তর ২৪ পরগনা জেলা দু’ভাগ করার প্রশাসনিক প্রস্তাব নিয়ে জটিলতা তৈরি হল। জেলা প্রশাসন চায় উত্তর ২৪ পরগনাকে ভেঙে বসিরহাটকে নতুন জেলা হিসেবে গঠন করা হোক। কিন্তু জেলা ভাগের পদ্ধতি নিয়ে বামেদের আপত্তি রয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূলও। শনিবার বারাসতে জেলাশাসকের ডাকা সর্বদল বৈঠকে তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। দলের পক্ষ থেকে পরে জানানো হয়, জেলা ভাগের সিদ্ধান্তে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনাকে ভেঙে দুটি নয়, তিনটি জেলা গঠন করতে হবে।
এ দিন বিকেলে জেলাশাসকের অফিসে আয়োজিত বৈঠকে জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার বর্তমান ভৌগোলিক সীমানা ভাগ করে দু’টি জেলা হবে। একটি হবে বসিরহাট, যেখানে বর্তমান বসিরহাট মহকুমাকে ভেঙে বসিরহাট ও মীনাখাঁদু’টি মহকুমা থাকবে। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে বিধাননগর, বারাসত, ব্যারাকপুর ও বনগাঁ থাকবে। বসিরহাটের হাড়োয়া বিধানসভাটি ভেঙে ৪টি ব্লক বসিরহাটে ও চারটি ব্লক উত্তর ২৪ পরগনায় রাখা হবে।
এই প্রস্তাবে কংগ্রেস আপত্তি জানায়নি। কত দিনে সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি হবে, সেই প্রশ্ন তোলে বিজেপি। বামেরা আপত্তি জানিয়ে বলে, ১টি মহকুমা নিয়ে একটি জেলা ও অন্য দিকে চারটি মহকুমা নিয়ে আরেকটি জেলা ভাগের এই প্রস্তাব অর্থহীন। বৈঠকের পরে সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “জেলা ভাগ হবে সমান ভাবে, এ ভাবে জেলা ভাগ অর্থহীন। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের নিয়মেই রয়েছে, একটি বিধানসভা দু’টি জেলার মধ্যে থাকতে পারবে না।”
বসিরহাটকে আলাদা জেলা করার প্রস্তাব মানলেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলাকে তিন ভাগ করার প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। দলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “বসিরহাট, বারাসত-বনগাঁ এবং বিধাননগর-ব্যারাকপুরের কমিশনারেট এলাকা নিয়ে মোট তিনটি জেলা গঠনের প্রস্তাব আমাদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে।” বৈঠকে না থাকা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “আগেও সর্বদল বৈঠক হয়। সে দিনই আমরা সমর্থন জানিয়ে দিই। এ দিন অন্য কর্মসূচি ছিল। তাই আগেই জানাই, আমাদের প্রস্তাব সোমবার পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” বৈঠক শেষে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনসল বলেন, “আয়তনের ভিত্তিতেই জেলা দু’ভাগ করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার আয়তন আর জেলার বাকি অংশের আয়তন প্রায় সমান। তবে সব দলের প্রস্তাবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |