নিজের বাড়ি প্রোমোটারের কাছে বিক্রি করে দিতে প্রবল আপত্তি ছিল বৃদ্ধের। অথচ বাড়ি বিক্রি করার জন্য প্রমোটারের কাছ থেকে অগ্রিম নেন ছেলে ও পুত্রবধূ। সে কথা জানতে পেরে হতাশায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ। অভিযোগ, তাঁকে মারধরও করা হয়। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের মনে হয়েছে, ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন। খড়দহ থানা এলাকার সুখচর জয়প্রকাশ নগর এলাকার ওই ঘটনায় মৃতের ছেলে এবং পুত্রবধূকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খোঁজ চলছে প্রোমোটার এবং তাঁর দুই শাগরেদের। ঘটনাস্থলে উদ্ধার একটি সুইসাইড নোটে তাঁর মৃত্যুর জন্য পরিবারের সকলকে দায়ী করা হয়েছে। শনিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “তদন্ত চলছে। পলাতকদের খোঁজ করছে পুলিশ।”
মৃতের নাম রাখালচন্দ্র দাস (৬৫)। ছেলে অরূপ দাস এবং পুত্রবধূ সোমাদেবীর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন। বাড়িটি রাখালবাবুই তৈরি করেছেন। অভিযোগ, স্থানীয় প্রোমোটার বঙ্কিম পোদ্দার এবং তাঁর দুই শাগরেদ রাজু ও রিঙ্কু দাসের কাছে ওই বাড়িটিকে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন অরূপবাবু। সে জন্য তাঁদের কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ ৬০ হাজার টাকাও নেওয়া হয়। এ সব কথা জানতেন না রাখালবাবু। বাড়ি বিক্রিতে প্রবল আপত্তি জানান তিনি। দিনকয়েক আগে ছেলে, পুত্রবধূর সঙ্গে এ নিয়ে অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, ওই সময় রাখালবাবুকে মারধরও করা হয়।
শুক্রবার সকালে তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানে রাখালবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখেন পরিজন, পড়শিরা। পুলিশ জানায়, বালিশের নীচ থেকে উদ্ধার সুইসাইড নোটে রাখালবাবু লিখেছেন, ‘আমার অজ্ঞাতসারে বাড়ি বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছিল। আপত্তি জানালে মারধর করা হয়। এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে না-পারায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি।’
পুলিশ সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে তাঁর ছেলে, পুত্রবধূ ছাড়াও প্রোমোটার এবং আরও দু’জনের নাম লিখেছেন রাখালবাবু। তাঁর মেয়েদের অভিযোগ, “এর আগেও রাখালবাবুকে মারধর করেছেন দাদা-বৌদি। প্রতিবাদ করে লাঞ্ছিত হয়েছি আমরাও।” পড়শিরা জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। মৃতের মেজমেয়ে টিঙ্কু হালদার শুক্রবার রাতে খড়দহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই গ্রেফতার করা হয় রাখালবাবুর ছেলে, পুত্রবধূকে। |