বিডিও-নিগ্রহের অভিযোগে শুক্রবার দুপুরে আগাম জামিন পেয়েছিলেন গোঘাটের বেঙ্গাই অঘোরকামিনী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সরোজ সিংহ। বিডিও-র নতুন অভিযোগে রাতে তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার সরোজবাবুর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ এবং কটূক্তি করার অভিযোগ দায়ের করেন গোঘাট-১ ব্লকের বিডিও জয়ন্ত মণ্ডল। শুক্রবার আরামবাগ আদালত সরোজবাবুর আগাম জামিন মঞ্জুর করে। ওই দিনই দুপুর ১২টা নাগাদ সরোজবাবু ১০-১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে আদালত সংলগ্ন এলাকায় জয়ন্তবাবুর গাড়ি থামিয়ে তাঁকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেন ও কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও, সরোজবাবুর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ভয় দেখানো এবং হিংসার উদ্দেশ্যে জমায়েতের অভিযোগ এনেছেন জয়ন্তবাবু। দুপুরেই তিনি অভিযোগপত্র জমা দেন আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর কাছে। মহকুমাশাসক সেই অভিযোগপত্র আরামবাগ থানায় পাঠিয়ে সরোজবাবুকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন পুলিশকে। রাত ২টো নাগাদ বাঁকুড়ার কোতলপুরের মসিনাপুরে বাড়ি থেকে সরোজবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। |
ধৃতকে শনিবার আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে ওঠা নতুন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে তাঁর আইনজীবী তপন হাজরা দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিজেএম সমরেশ বেরাকে জানান, শুক্রবার যে সময়ে বিডিও-র গাড়ি থামিয়ে তাঁকে হুমকি ও কটূক্তি করার অভিযোগ উঠেছে, সেই সময়ে সরোজবাবু আদালতে ছিলেন আগাম জামিনের জন্য। আর যে জায়গায় ঘটনার কথা অভিযোগে রয়েছে, সেই জায়গা আদালত চত্বর থেকে দূরে। সরকার পক্ষের আইনজীবী মোহনলাল হালদার বিচারকের কাজে সরোজবাবুর জামিন নামঞ্জুরের আবেদন করে জানান, অভিযোগটির তদন্ত একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এর পরেই বিচারক সরোজবাবুকে তিন দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে ধৃতের মেয়ে সঙ্গীতা সিংহ তাঁর বাবার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “ব্লক ও মহকুমা প্রশাসন ষড়যন্ত্র করে বাবাকে জেলে পাঠাল। বাবা কোনও অন্যায় করেননি।”
আদালতে শুনানি চলাকালীন আরামবাগ এবং তারকেশ্বরের কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের পক্ষে আরামবাগ নেতাজি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অসীম দে বলেন, “প্রশাসন নতুন করে যে অভিযোগ এনেছে, তা সত্য নয় বলেই আমাদের ধারণা।” নতুন অভিযোগ নিয়ে বিডিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মহকুমাশাসক বলেন, “বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। কোনও মন্তব্য করব না।”
গত বৃহস্পতিবার কলেজের কাছেই (প্রায় ২০ মিটার) বেঙ্গাই হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ‘নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে’ পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে কলেজের মাঠ সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ জানান বেঙ্গাই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। সে দিন বিডিও কলেজে গিয়ে দেখেন, মাঠে মাটি ফেলার কাজ চলছে। লোকের ভিড়ে এলাকা সরগরম। জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, সেই সময়ে সরোজবাবু এবং তাঁর কিছু সহকর্মী তাঁকে কটূক্তি করেন। ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। এর পরে শুক্রবার দুপুরে ওই নতুন অভিযোগ। |