বাসের রেষারেষির জেরে দুই পথচারীর মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে শনিবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল পাতিপুকুর এলাকায়। শনিবার সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে যশোহর রোডে, লেকটাউন থানা এলাকার অর্ন্তগত রেলসেতুর কাছে। পরে ঘণ্টা দেড়েক যশোহর রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবশেষে অবরোধ ওঠে। দু’টি বাসকে আটক করা হলেও তাদের চালক এবং খালাসিরা পলাতক।
মৃতদের এক জন মহিলা। নাম উমা সামন্ত (৪০)। অন্য জনের নাম কৃষ্ণকান্ত দে সরকার (৪৫)। তাঁদের বাড়ি পাতিপুকুরে। দুর্ঘটনার জেরে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলাও আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় নাগেরবাজার থেকে শ্যামবাজার যাওয়ার পথে ২১৫/১ এবং ২১৯ রুটের দু’টি বাসের মধ্যে রেষারেষি চলছিল। পাতিপুকুর রেলসেতুর কাছে এসে ২১৫/১ রুটের বাসটি আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কৃষ্ণকান্তবাবুকে ধাক্কা মেরে ব্রিজ লাগোয়া ফুটপাথের উপর উঠে যায়। কৃষ্ণকান্তবাবু সাইকেল চালাচ্ছিলেন। ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন উমাদেবী ও অন্য মহিলা। বাসটি সজোরে তাঁদের ধাক্কা মারে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিন জনকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা কৃষ্ণকান্তবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে সেখানেই মৃত্যু হয় উমাদেবীর। আহত মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানায়, কৃষ্ণকান্তবাবু মাছের ব্যবসায়ী ছিলেন। এ দিন সকালে পাতিপুকুর বাজারেই মাছ বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন তিনি। অচিন্ত্য রায় নামে ২১৫/১ রুটের এক যাত্রী বলেন, “লেকটাউন ছাড়ার পরেই অন্য বাসের সঙ্গে আমাদের বাসটি পাল্লা দিয়ে চলছিল। পাতিপুকুর রেলসেতুর কাছে এসে আমাদের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। আমরা বারবার রেষারেষি বন্ধ করতে বললেও চালক শোনেননি।”
ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা পথ অবরোধ করেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় প্রায় সারা বছরই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলে। তার উপর মাছের বাজারের জন্য যানজট লেগেই থাকে। অভিষেক রায় নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মাঝেমধ্যে ট্র্যাফিক পুলিশ দেখা যায় এখানে। এ ব্যাপারে বহুবার বলেও কোনও লাভ হয়নি।”
দীর্ঘ অবরোধের জেরে এক দিকে শ্যামবাজার, অন্য দিকে দমদম পার্ক-যশোহর রোড হয়ে বেলগাছিয়া পর্যন্ত তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে। বহু অফিসযাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। অনেকেই যানবাহন না পেয়ে হাঁটতে শুরু করেন। পরে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে ঘটনাস্থালে যান স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসুও।
পৃথক একটি ঘটনায় এ দিন দুপুর সওয়া তিনটে নাগাদ দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কোলবার্থ রোডে দু’টি ট্রেলারের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক শিশু ও মহিলার। আহত এক। পুলিশ জানায়, মৃত ধনমন্তী দেবী (৪০) ও অমিতকুমার বিন্দ (৭) স্থানীয় টিনাখুলির বাসিন্দা। আহত ব্যক্তি একটি ট্রেলারের যাত্রী। দুপুরে ভিআইপি রোডে, লেকটাউনের কাছে লরি-ট্যাক্সির সংঘর্ষে আহত হয়েছেন তিন জন। তাঁরা প্রত্যেকেই ট্যাক্সির আরোহী।
শুক্রবার গভীর রাতে রাসবিহারী কানেক্টরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক মোটরবাইক চালকের। গুরুতর আহত হয়েছেন আরোহী। পুলিশ জানায়, মৃত দলজিৎ সিংহ (৩২)-এর বাড়ি রাজারহাটের নিউটাউন এলাকায়। দলজিৎ বিপজ্জনক গতিতে মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে পুলিশ। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মারেন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানেই মারা যান দলজিৎ। |