চলতি বাজেট অধিবেশনে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করার ক্ষেত্রে খুব একটা অগ্রগতির আশা দেখছেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
শিল্প মহল বারবারই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব পণ্য-পরিষেবা কর চালু করা হোক। বণিকসভা ফিকি-র সভাতেও আজ প্রশ্ন ওঠে, কবে চালু হবে ওই কর? প্রণববাবু এ ব্যাপারে তাঁর অসহায়তার কথাই জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমার উপরেই সব কিছু নির্ভর করে না। জিএসটি চালু করতে সংসদের দুই কক্ষেই দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন দরকার। এর পরেও ২৮টি রাজ্যের মধ্যে অন্তত ১৫টি রাজ্যের অনুমোদন চাই।” অর্থাৎ বিজেপি সাংসদদের ও বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির সহযোগিতা ছাড়া কেন্দ্রের পক্ষে বিশেষ কিছু করা সম্ভব নয়। বাজেট অধিবেশনের মুখে সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিদের সঙ্গে বৈঠকে কিন্তু তেমন আশ্বাস পাননি প্রণববাবু।
অর্থ মন্ত্রকের ধারণা, চলতি অধিবেশনে জিএসটি বিল নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ারও আশা নেই। কমিটির প্রধান প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা এখন বেশি ব্যস্ত আর্থিক অনিয়ম প্রতিরোধ আইনের সংশোধনী বিল নিয়ে। বিষয়টি কালো টাকার সঙ্গে সম্পর্কিত। এবং ভারতে কালো টাকা ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিজেপি নেতৃত্ব বহু দিন ধরেই সরব হয়েছে। |
এই পরিস্থিতিতে প্রণববাবুর বক্তব্য, জিএসটি নিয়ে এগোতে হলে রেখে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই শক্ত হাতে দর কষাকষি করতে হবে। ‘আগামী মাসগুলিতে সাহসি সিদ্ধান্ত নিতে হবে’ ভর্তুকি কমানোর প্রশ্নেও। বাজেট প্রস্তাবে ভর্তুকি অনেকটাই কমানোর কথা বলেছেন তিনি।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাজেট অধিবেশন ভালয় ভালয় মিটে যাওয়ার পরে ডিজেল, কেরোসিন বা রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানোর মতো কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে হাঁটতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নিলাম না ডেকে কয়লার ব্লক দিয়ে দেওয়ার ফলে সরকারের ১০ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে যে হইচই শুরু হয়েছে, তাতে আদৌ আমল দিচ্ছেন না অর্থমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, সিএজি তাদের খসড়া রিপোর্টে প্রাথমিক ভাবে যে সব প্রশ্ন তোলে, মন্ত্রকের জবাব পাওয়ার পর তার ৯০ শতাংশই খারিজ হয়ে যায়। এটাই নিয়ম। দেড়শো বছর ধরে এটাই হয়ে এসেছে। প্রণববাবুর কথায়, “সিএজি-র কাজ হল সরকারের কাজের ভুল ধরা, প্রশংসা করা নয়। অহেতুক এ নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে।” |