জল দেওয়ায় জোর জলপাইগুড়িতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
আগামী আর্থিক বছরে সীমান্তবর্তী জনপদগুলিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনার বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরকে পাঠানো হয়েছে। আগামী আর্থিক বছরের জন্য জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ২৬টি পানীয় জল সরবারহ প্রকল্প তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। প্রকল্পগুলি রূপায়নে খরচ হবে প্রায় ৭ কোটি টাকা। জেলা পরিকল্পনা কমিটির বৈঠকেও সীমান্তবর্তী এলাকাতে পানীয় জল সরবারহ প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় ভুটান ও বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলা শাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “জেলা পরিকল্পনা কমিটি বৈঠক করে সীমান্তবর্তী এলাকায় পানীয় জল সরবারহ ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে রাখা হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পের বিস্তারিত পরিকল্পনা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলি রূপায়নের পরে সীমান্তবর্তী গ্রাম বা জনপদে পানীয় জল সঙ্কেটর সিংহভাগ সমাধান হয়ে যাবে।” জলপাইগুড়ি. জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক দীপঙ্কর পিপলাই বলেন, “প্রকল্পগুতিতে অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৭ কোটি টাকা খরচ হবে প্রকল্পগুলি রূপায়নে।” প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে মূলত দুটি সমস্যা রয়েছে, যোগাযোগ এবং পানীয় জল। দীর্ঘদিন ধরেই যোগাযোগের ব্যবস্থা এবং পানীয় জল নিয়ে সীমান্তবর্তী জনপদগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। চামূচির্র্, মাকড়াপাড়া, চুয়াপাড়া, নাগরাকাটা, বক্সার মত এলাগাকার বাসিন্দাদের ভুটান থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনতে হয় বলে অভিযোগ। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজগঞ্জের কুকুরজান, সুখানির প্রত্যন্ত এলাকাতে পানীয় জল সরবারহের কোনও ব্যবস্থাই নেই বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। সীমান্তবর্তী প্রতিটি জনপদেই জল পৌঁছে দিতে নলকূপ, গভীর নলকূপ কোথাও বা পাহাড়ি ঝোড়া থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল নিয়ে আসা, পাম্পসেট বসিয়ে জল তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চা বাগান এলাকাগুলির শ্রমিক বস্তিতে পাইপের সাহায্যে জল পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির থেকেও ভুটান সীমান্তের পাহাড়ি এলাকাগুলিতেই জলের সঙ্কট বেশি থাকায় ২৬টি প্রকল্পের মধ্যে ২০টি প্রকল্পই ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির। প্রশাসনের তৈরি প্রকল্পগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের ভুটান সীমান্তের হান্টাপাড়া চা বাগান এলং লঙ্কাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে জল সরবারহ ব্যবস্থা। এরজন্য খরচ হবে যথাক্রমে ৪৫ লক্ষ এবং ৩৫ লক্ষ টাকা। আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের চুয়াপাড়া অথবা ধূপগুড়ি ব্লকের চামূচির্র্, রাজাভাতখাওয়া, বক্সা, কালচিনি, জয়গাঁ, কুমারগ্রাম, আলিপুরদুয়ারের মত সীমান্তবর্তী এলাকা যেখানে সারা বছরই পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র থাকে। সেই এলাকাগুলিকেও এবারে পানীয় জল প্রকল্পের তালিকায় রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সদর ব্লকের মালকানি গ্রাম পঞ্চায়েত, রাজগঞ্জের সুখানি, কুকরজানেও ছোট ও মাঝারি মাপের জল সরবারহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। সীমান্তবর্তী মালকানিতে জল পৌঁছে দিতে খরচ পড়বে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা। |