ধৃত সাইবার-অপরাধীর যোগাযোগ হংকংয়েও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি |
সাইবার অপরাধে ধৃত নেপালের বাসিন্দাকে গ্রেফতারের পরে লাগাতার জেরায় যা তথ্য মিলেছে তাতে চমকে উঠেছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ। গত ১৩ মার্চ কিশোর প্রধান নামের ওই ব্যক্তিকে মিরিক থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, নেপাল সীমান্তবর্তী মিরিকে ঘাঁটি গেড়ে বেআইনিভাবে ওয়্যারলেস সেট এবং ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে কিশোর বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যোগাযোগ রাখছিল বলে অভিযোগ। এমনকি, তার সঙ্গে হংকং-এর তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার যোগাযোগের প্রাথমিক প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া কিশোর নিজেকে ভোলা কিশোর ডঙ্গল হিসাবে কেন বিভিন্ন এলাকায় পরিচয় দিয়েছে তা নিয়েও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। তবে ঠিক কী উদ্দেশ্যে কিশোর ওই কাজ করছিল তা এখনও পুলিশের এখনও পরিষ্কার নয়। শুক্রবার ধৃতকে কার্শিয়াঙের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতকে ফের চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে কিশোরকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। জেলা পুলিশের পাশাপাশি সেনা বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে খুঁজছে পুলিশ। |
দার্জিলিঙের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “বেআইনিভাবে ট্রান্সমিটার, ওয়্যারলেস সেট ব্যবহারের অভিযোগে নেপালের ওই বাসিন্দাকে ধরা হয়েছে। মিরিকে সে একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাও চালাচ্ছিল। বহু যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেনা বাহিনীর সাহায্য ছাড়াও তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক বিষয়টি দেখছে। ধৃতকে টানা জেরা করা হচ্ছে। আরও একজনকে খোঁজা হচ্ছে।” তবে ঠিক কারণে ধৃত কিশোর এই কাজ করছিল তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের রিপোর্ট আসলে তা আরও পরিষ্কার হবে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, মিরিকে গত তিন মাস ধরে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকছিল কিশোর। সেই বাড়ির মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। ওই বাড়ি থেকে টিপি লিঙ্ক রাউটার, নেট বুস্টার, ইন্টারনেট মডেম, রিপিটার, পাওয়ার স্পিলিটার, সিপিইউ, ল্যাপটপ ছাড়াও দুটি অ্যান্টেনা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃত কিশোর ‘ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল-এর মাধ্যমে সে ওয়্যারলেস সেটের ব্যবহার করছিল। মিরিক এলাকায় কিশোরের ওয়্যারলেসের সিগন্যাল ধরা পড়ার তা প্রথমে সেনা বাহিনীর সিগন্যাল উইং-এ পরীক্ষা করা হয়। সেখান থেকে গোটা বিষয়টি বেআইনি জানিয়ে দেওয়ার পরেই অভিযানে নামে পুলিশ। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, কিশোর যে ধরণের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করছিল তাতে অতি সহজেই কম পয়সায় বিদেশে যে কোনও প্রান্তে কথাবার্তা বলা যায়। এতে সরকারি বিশাল অঙ্কের টাকার ক্ষতি হয়। এবারে দুই দেশের সীমান্তে বসে সে কোনও সংগঠনের হয়ে কাজ করছিল কী তাও দেখা হচ্ছে। গত ১০ জিনের জেরায় কিশোর পুলিশকে জানিয়েছে, হংকং এবং নেপালের দুটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার হয়ে কাজ করে। ওই সংস্থা দুটির নামও পুলিশ পেয়েছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, গোটা ঘটনাটি রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ পেয়ে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের বিশেষ দল তদন্তে নেমেছে। |