নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
বটলিফ কারখানার চায়ের উপরে নির্ভর করে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে কয়েক হাজার ছোট চা বাগান তৈরি হয়েছে। ওই সমস্ত চা বাগানের কাঁচা পাতা বটলিফ কারখানায় বিক্রি হয়। সেখান থেকে চা পাতা খোলা বাজারে আসায় ছোট চা বাগান মালিকদের দাম নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, চা নিলাম কেন্দ্রে মাধ্যমে বিক্রি হলে তাঁরা কাঁচা পাতার ভাল দাম পেতেন। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটি চায়ের অভাবে ধুঁকছে। বড় বাগানের মালিকেরা শিলিগুড়ি এবং কলকাতার নিলাম কেন্দ্র থেকে জলপাইগুড়িতে চা পাতা পাঠাতে রাজি নন। এই পরিস্থিতিতে বটলিফ কারখানার চা পাতা দিয়ে জলপাইগুনির চা নিলাম কেন্দ্র চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বটলিফ কারখানার চা পাতা দিয়ে নিলাম শুরু করতে চলতি মাসের শেষের দিকে বৈঠকে বসতে চলেছে জলপাইগুড়ির চা নিলাম কমিটি। জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “আশা করছি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিলামের দিনক্ষণ ঘোষণা করা সম্ভব হবে। বংলা নতুন বছরের গোড়ায় নিলাম শুরু হতে পারে।” ভারতীয় চা পর্ষদ অবশ্য মনে মনে রাজ্য সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। গত ১৯ মার্চ ভারতীয় চা পর্ষদের চেয়ারম্যান এমজিভিকে ভানু জলপাইগুড়িতে গিয়ে নিলাম কেন্দ্রের আধিকারিক-সহ জেলা প্রসাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ক্রেতা, বিক্রেতা, ব্রোকার, গুদাম মালিকদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। চা পর্ষদের চেয়ারম্যান ওই বৈঠকে জানিয়ে দেন, নিলাম কেন্দ্রকে ভালভাবে চালাতে গেলে রাজ্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন। রাজ্য সরকার কিছু ক্ষেত্রে নতুন নিলাম কেন্দ্রকে ছাড় না দিলে কেন্দ্র চালানো সম্ভব নয়। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর জন্য বৈদ্যুতিন নিলামের প্রস্তাবও দিয়েছেন চেয়ারম্যান। নিলাম কেন্দ্র চালাতে উত্তরবঙ্গের বটলিফ কারখানাগুলির থেকে চা এনে নিলাম শুরু করার বিকল্প চেষ্টা নিয়ে নিয়ে চা পর্ষদের আপত্তি নেই বলে চেয়ারম্যান জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি ভানু বলেন, “নিলাম কেন্দ্র চালাতে রাজ্য সরকারের তরফে সাহায্য প্রয়োজন। চা পর্ষদ রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে। বটলিফ কারখানার চা নিলাম করার প্রস্তাবে পর্ষদের আপত্তি নেই। জলপাইগুড়ি নিলাম কেন্দ্রের পরিকাঠামো খুব ভালো রয়েছে। আশা করি কেন্দ্রটি দ্রুত চাঙ্গা হয়ে উঠবে।” চা মালিকদের সংগঠন আইপিটিএর প্রতিনিধি তথা নিলাম কমিটির সদস্য কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “নতুন কেন্দ্র তৈরি হলে তার শৈশবকাল থেকেই যত্ন নিতে হয়। যেটা বিগত বাম সরকার নেয়নি। চা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে বিশদে নিলাম কেন্দ্রের পরিস্থিতি জানানো হয়েছে।” |