ট্রেভর জেমস মর্গ্যান সোজাসুজি বলে দিলেন, তিনি টোলগে ওজবেকে ছাড়তে রাজি নন। ইস্টবেঙ্গল কোচ ক্লাব তাঁবুতে সাক্ষাৎকার দিতে বসে স্পষ্ট বললেন, “টোলগেকে হারানো মানে তো পরের মরসুমে ১৬-১৭টা গোল হারানো। আমি টোলগের পাশে আরও এক জন ভাল স্ট্রাইকার খুঁজছি। যাতে গোল করার চাপটা ওকে একা না নিতে হয়।”
এই মুহূর্তে কলকাতা দল বদলে অন্যতম চরিত্র টোলগে। পেন, ওপারার সঙ্গে আর এক বছরের চুক্তি, ক্লাব ছাড়ার প্রশ্ন নেই। টোলগে এ বার চুক্তিহীন জেনে তাঁকে পেতে ঝাঁপিয়েছে মোহনবাগান, প্রয়াগ ইউনাইটেড, চার্চিল ব্রাদার্স। প্রতিদিন জল্পনা চলছে। ইস্টবেঙ্গলও টোলগের টাকা বাড়াতে রাজি। টোলগের দাম এক কোটি ছাপিয়ে যাচ্ছে। মর্গ্যান কিন্তু বলে রাখলেন, “আমি টোলগেকে কোনওমতেই ছাড়ব না। ওর সঙ্গে আমার অনেক বার আলাদা কথা হয়েছে দলবদল নিয়ে। ও পেশাদার। শেষ সিদ্ধান্ত ও-ই নেবে। কিন্তু আমি ওকে হারাতে চাই না।”
যা খবর, তাতে বর্তমান তিন বিদেশিকে রেখে এক জন স্ট্রাইকারকে নিতে চায় ইস্টবেঙ্গল। প্রথম পছন্দ র্যান্টি মার্টিন্স। দ্বিতীয় পছন্দ চিডি বা জেমস মোগা। মোগাকে চাইছে মোহনবাগানও। স্পোর্টিং স্ট্রাইকারকে নিয়ে তাই টানাটানি তুঙ্গে। |
ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে মর্গ্যানের আর এক বছরের চুক্তি। কিন্তু ক্লাবের একটা অংশ তাঁকে চায় না। করিম বেঞ্চারিফার নাম আলতো ভাবে উঠেছে। মর্গ্যান কিন্তু বললেন, “আমি ইস্টবেঙ্গলেই থাকছি।” মর্গ্যানকে নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য কিন্তু তাঁর পাশে। বললেন, “ওর সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। না রাখার কথা উঠছে কেন? বাদ দেওয়ার কোনও খবর অন্তত আমি শুনিনি।” তিনিই দায়িত্বে থাকবেন জেনে ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে দিয়েছেন মর্গ্যান। কথা বলে বোঝা গেল, এই মুহূর্তে লাল-হলুদ কোচের নোটবুকে যে সব নাম ঘোরাফেরা করছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম চার্চিল ব্রাদার্সের ডিফেন্ডার ডেঞ্জিল ফ্রাঙ্কো। তালিকায় আছেন প্রয়াগ ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার অর্ণব মণ্ডল, সালগাওকরের ডিফেন্ডার খেলেম্বা সিংহ, চার্চিল মিডফিল্ডার লালরিন্দিকা লালতে।
রবিবার আই লিগে সালগাওকরের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে মর্গ্যানের চিন্তা সেই চোট-আঘাত। মেহতাব হোসেন নেই। হাঁটুর চোট এখনও সারেনি। মাঠে ফিরতে লাগবে আরও এক সপ্তাহ। চোটের গ্রহ ছেড়ে বেরোতে পারেননি নওবা সিংহ, ভাসুম এবং সুশান্ত ম্যাথুও। ল্যাপটপ খুলে কুয়েতে ০-৩ হারের ম্যাচটা দেখিয়ে পেন, এডমিলসনদের বোঝানোর ফাঁকে লাল-হলুদ কোচ বলছিলেন, “চোট-আঘাতেই বছরটা কেটে গেল। মেহতাবকে না পাওয়াটা সবচেয়ে বেশি ভোগাল। ও না থাকলে ওপারার ওপর চাপ বেড়ে যায়। সে জন্যই গত বারের তুলনায় এই মরসুমে অনেক বেশি গোল খেতে হয়েছে আমাদের।” কিন্তু এত দিনেও মেহতাবের কোনও বিকল্প খুঁজে পাওয়া গেল না কেন? মর্গ্যানের যুক্তি, “হঠাৎ যদি বার্সেলোনাকে বলা হয় মেসির বিকল্প খুঁজতে, গুয়ার্দিওলাও পারবে না। আমি মেহতাবের সঙ্গে মেসির তুলনা করছি না। তবে মেহতাবের মতো ফুটবলারের বিকল্প বললেই খুঁজে পাওয়া যায় না।”
নতুন মরসুমে নতুন স্বপ্ন কী মর্গ্যানের? দেখা গেল, পরিকাঠামো এবং মাঠ নিয়ে বিরক্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ। তাঁর সাফ কথা, “মাঠের কোনও উন্নতি হয়নি। প্রথমে যা ছিল এখনও তাই অবস্থা। আমাদের একটা আলাদা অনুশীলনের মাঠ খুব প্রয়োজন। যেখানে আমরা যখন ইচ্ছা অনুশীলন করতে পারব।” |