|
|
|
|
সতর্ক করলেন কৌশিক |
সংস্কার না হলে ফের বাড়বে জিনিসের দাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাজেট পেশের সপ্তাহখানেক আগের কথা। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসুর দিল্লির বাড়িতে এক জন পরিচারিকা নতুন কাজে লেগেছেন। বাজেট নিয়ে কৌশিকবাবু তখন খুব ব্যস্ত। প্রতিদিনই ভোরবেলা অফিসে বেরিয়ে যান, গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন। কৌশিকবাবুর স্ত্রী সেই পরিচারিকাকে প্রশ্ন করলেন, ‘তুমি জানো, দাদাবাবু কী কাজ করেন?’ পরিচারিকা উত্তর দিলেন, ‘জানি, উনি জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর কাজ করেন’!
বাজেটের এক সপ্তাহ পরে আজ কৌশিকবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করে জানালেন, আগামী ছ’মাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কারের কর্মসূচিগুলি রূপায়ণ করা না-গেলে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ফের মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দিতে পারে। প্রণববাবুর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার কথায়, “আগামী ছ’মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ছ’মাসে রাজনৈতিক স্বার্থ ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে এক জায়গায় আসতে হবে। না-হলে এক থেকে দেড় বছরের মাথায় ফের জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে আসবে।”
শরিকদের সঙ্গে মতৈক্যের অভাবে মনমোহন-সরকারের অধিকাংশ আর্থিক সংস্কার কর্মসূচি থমকে রয়েছে। খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েও শরিকি আপত্তিতে তা স্থগিত রাখতে হয়েছে কেন্দ্রকে। রাজ্যগুলির সঙ্গে ঐকমত্য না-হওয়ায় পণ্য-পরিষেবা করের মতো সংস্কারও আটকে। সে দিকে তাকিয়েই আজ ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্সের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে দেশের শিল্পমহলের সাহায্য চেয়েছেন কৌশিক। ভারতের বাজারে বিদেশি পুঁজি টানতে বাজেটে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন প্রণববাবু। আজ কৌশিকবাবু বলেন, “বিদেশি পুঁজি এখন অনেক সহজলভ্য। ভারতীয় সংস্থাগুলি যাতে তার সুবিধা পেতে পারে, সে জন্য মূলধনী খাতে বিনিময়যোগ্যতা (ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট কনভার্টিবিলিটি) বাড়ানোর পথে যাওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। তাঁর যুক্তি, এই বিনিময়যোগ্যতা আরও বাড়ালে বিদেশি পুঁজি অপেক্ষাকৃত সহজলভ্য হয়ে যাবে। কিন্তু একই সঙ্গে টাকা ও ডলারের বিনিময় মূল্যের দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন বলেও তিনি জানান।
ঘটনা হল, ডলারের তুলনায় টাকার দাম আজও পড়েছে। আজ এক ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ৫১ টাকা ১৭ পয়সায়। একটা সময় যা ৫১ টাকা ২৮ পয়সাতেও নেমে গিয়েছিল। তবে কৌশিকবাবুর মতে, এখনই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “আমার মতে টাকার দাম এখন যেখানে রয়েছে, তা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ আমেরিকার তুলনায় ভারতের মূল্যবৃদ্ধির হার অনেকটাই বেশি ছিল।” আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটলে দেশের অর্থনীতি যে দু’-চার বছরের মধ্যেই ফের উঁচু হারের আর্থিক বৃদ্ধির পথে ফিরতে পারে, সে কথাও জানিয়েছেন কৌশিকবাবু। |
|
|
|
|
|