বিধাননগরে বর্তমান সম্পত্তিকরের বিল প্রত্যাহারের সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেও, গোটা এক দিন সেই করের বিল নেওয়ার পরে দ্বিতীয় দিনে এসে বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ সেই ভুল শোধরালেন। খোদ পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী কথায়, “পুরমন্ত্রীর কথা বুঝতে আমাদের ভুল হয়েছিল।” ফলে আজ, শুক্রবার থেকে বিধাননগরে বর্তমান সম্পত্তিকর আদায়ের কাজ স্থগিত করলেন পুরকর্তৃপক্ষ।
বুধবার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ ও ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই বাসিন্দাদের কাছে পাঠানো সম্পত্তিকরের বিল প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। এর পরেও বৃহস্পতিবার কর নেওয়া হয়। কৃষ্ণাদেবী বলেন, “ভুল বুঝতে পেরেই কর আদায় স্থগিত হয়েছে।” কৃষ্ণাদেবী আরও বলেন, “সরকারের সিদ্ধান্ত মতো ২০০৫-এর ৩০ জুন পর্যন্ত মূল্যায়নের ভিত্তিতে করের বিল পাঠানো হবে। যাঁরা ইতিমধ্যেই কর দিয়েছেন তাঁদের পরের বিল থেকে বাদ বা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এ দিন বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও অনেকে কর দেওয়ার দাবি জানান। অনেকে ক্ষোভও জানান। তাঁদের দাবি, কর আদায় হবে বলে গতকালও পুরকর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছিলেন। আচমকা আজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের দুর্ভোগ হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ দিন চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠকের পরে কৃষ্ণাদেবী বলেন, “অনেকের ক্ষেত্রে বিল বেশি এসেছিল। ভুল সংশোধন করে নিচ্ছি। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা কাজ করতে চাইছি।”
কিন্তু কেন এই ভুল? কৃষ্ণাদেবীর দাবি, সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্যে ভুল ছিল। ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে। পুরমন্ত্রী তাঁদের দাবি মেনেছেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, পুরমন্ত্রীর অধীনে আমরা। তাঁদের নির্দেশ কার্যকর করতে আমরা বাধ্য।” কার্যত একই সুরে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তেরও দাবি, করের বোঝা চাপানো তাঁদের দলের নীতি নয়। ভুল ঠিক করে নেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি, সম্পত্তিকর সংক্রান্ত মামলা তুলতে আদালতের কাছে পুরসভা, সরকার ও আবাসিকদের সংগঠন বিধাননগর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন যৌথ হলফনামা দেবে বলেও জানান সব্যসাচীবাবু। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে, পুরমন্ত্রীর উদ্যোগে দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা মিটতে চলেছে।”
এ দিকে, বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “পুরকর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ। আমরাও চাই পুর-কোষাগার সমৃদ্ধ হোক। মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমরা আবেদন করব।”
যদিও মামলা প্রত্যাহার নিয়ে বর্তমান পুরকর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগেও আলোচনা হয় এই সংগঠনের। কিন্তু এত দিন কেন তা কার্যকর হল না, তার উত্তরে সব্যসাচীবাবু বলেন, “যখন আলোচনা হয়েছিল, সরকারে তখন বামেরা। তবে এ বার সমস্যা মিটতে চলেছে।” |