ব্যাঘাত পঠনপাঠনে
প্রাথমিকে ‘যথেচ্ছ’ বদলি নিয়ে মামলার পাহাড়
কোনও নির্দিষ্ট নীতি না-মেনে রাজ্যের নতুন সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যথেচ্ছ বদলি করছে বলে অভিযোগ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একের পর এক মামলা দায়ের হয়েছে। বদলি প্রক্রিয়ার অসঙ্গতির কারণে অনেক প্রাথমিক স্কুলই শিক্ষকহীন হয়ে পড়েছে কিংবা শিক্ষক-সংখ্যা খুবই কমে যাওয়ায় পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের বদলির সিদ্ধান্তকে চালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়ার এজলাসে চলতি সপ্তাহেই বদলি সংক্রান্ত এই সব মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা।
কয়েক জন আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির ব্যাপারে সরকারের কোনও নীতি নেই। কোনও স্কুলে ন্যূনতম দু’বছর কাজ করার পরে এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকা বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে বদলি চেয়ে আবেদন করতে পারেন। যদি দেখা যায়, আবেদন অনুযায়ী তাঁকে বদলি করার সুযোগ আছে, তা হলে সেটা করা হয়। এত দিন এ ভাবে কিছু কিছু বদলি হত। কিন্তু এখন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানেরা খুশিমতো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি করছেন। সংসদ বদলির সিদ্ধান্ত নিতে পারে ঠিকই। কিন্তু পূর্বতন সংসদ ভেঙে দেওয়া হলেও প্রায় কোনও জেলাতেই নয়া সংসদ গঠিত হয়নি।
আবেদনকারীদের আর্জির জবাবে শিক্ষা দফতরের তরফে তাঁদের আইনজীবীদের জানানো হয়েছে, রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও নীতি নেই। তবে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য জানান, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির ক্ষেত্রে দু’টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে:
• শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।
• বদলির ক্ষেত্রে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে।

কোনও স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা হয়তো ১৪, কিন্তু শিক্ষকের সংখ্যা ছয়। আবার কোথাও ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হয়তো ১২৯, অথচ শিক্ষক মাত্র এক জন! এই বৈষম্য দূর করার জন্য কিছু বদলি করা হচ্ছে। সে-ক্ষেত্রেও বাড়ি থেকে যাতায়াতের বিষয়টি ভাবনায় থাকছে বলে মানিকবাবুর দাবি।
আদালতে আবেদনকারীদের পেশ করা তথ্য অবশ্য মানিকবাবুর এই দাবি সমর্থন করছে না। যেমন, স্বাতী দত্ত। পড়ান বর্ধমান জেলার ইস্পাতনগরী ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে। তাঁর বাড়ি স্কুলের দু’কিলোমিটারের মধ্যে। তাঁকে বদলি করা হয়েছে খাণ্ডেশ্বর সত্যগোপাল বিদ্যালয়ে, যার দূরত্ব তাঁর বাড়ি থেকে ২০ কিলোমিটারেরও বেশি। বিশ্বনাথ সরকার নামে এক প্রতিবন্ধী শিক্ষক ছিলেন নদিয়া জেলার সদর আরবান সার্কেলে। তাঁকে শান্তিপুর নিউ সার্কেলে বদলি করা হয়েছে। এখন তাঁর বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। সুদীপ্ত ঘোষ নবদ্বীপ থেকে বদলি হয়েছেন বীরনগরে। প্রথমে নৌকো, তার পরে ট্রেনে তাঁকে যেতে হবে বীরনগর স্টেশনে। সেখান থকে ভ্যানরিকশায় ছ’কিলোমিটার। তারও পরে এক কিলোমিটার হাঁটাপথ।
কাল, বৃহস্পতিবার এই ধরনের মামলার শুনানি শুরু হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.