এক যুবককে খুনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে হাওড়ার ডোমজুড়ের ভান্ডারদহ গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। মৃতের নাম অভিজিৎ পাল (২৪)। এক প্রতিবেশীই তাঁকে খুন করিয়েছেন এই অভিযোগে ওই ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। কিছু জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কার্তিক পাল নামে অভিজিতের ওই প্রতিবেশীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভান্ডারদহ কাকপাড়া পঞ্চাননতলার বাসিন্দা অভিজিতের দেহ সোমবার রাতে উদ্ধার হয় হুগলির কামারকুণ্ড রেল স্টেশনের কাছ থেকে। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাতেই দেহ শনাক্ত করেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। অভিজিৎ ডোমজুড়ে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন। তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে বাড়ি থেকে সাইকেলে চড়ে দোকানে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন ওই যুবক। তারপর থেকে তাঁর কোনও সন্ধান মেলেনি। কামারকুণ্ড স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধার থেকে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এ দিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই অভিজিতের দেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসীদের সব রাগ গিয়ে পড়ে প্রতিবেশী পেশায় ইঞ্জিনভ্যান চালক কার্তিক পালের উপরে। অভিজিতের পরিবার এবং গ্রামবাসীরা জানান, গত শনিবার রাতে অভিজিৎ কালীপুজো উপলক্ষে কার্তিকবাবুর বাড়ির সামনে নাচানাচি করছিলেন। তা নিয়ে বছর পঞ্চাশের কার্তিকবাবুর সঙ্গে অভিজিতের ঝগড়া হয়।
গ্রামবাসীদের একাংশ এবং অভিজিতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, সেই ঝগড়ার জেরেই কার্তিকবাবু লোক লাগিয়ে অভিজিৎকে খুন করিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে গ্রামবাসীরা কার্তিকবাবুর বাড়িতে চড়াও হন। ঘরের আসবাবপত্র বাইরে টেনে ফেলে দেন। কার্তিকবাবুর ইঞ্জিনভ্যানটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ির ভিতরে তখন ছিলেন কার্তিকবাবু একা। তাঁর স্ত্রী-সহ পরিবারের অন্যেরা পালিয়ে যান। এই অবস্থায় পুলিশ এসে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে কার্তিকবাবুকে উদ্ধার করে থানায় আনে। বেলার দিকে অভিজিতের কাকা মুকুন্দ পালের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ কার্তিকবাবুকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, কার্তিকবাবু, তাঁর স্ত্রী, এক শ্যালক-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন মুকুন্দবাবু। তদন্ত শুরু হয়েছে। বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “হুগলির শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে ওই যুবক কী ভাবে মারা গিয়েছেন।” |