বস্তি উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়াল বর্ধমানের পারবীরহাটায়। মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, আদালত ওই জায়গা সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়েছেন। তার আগে বস্তির মালিককে কোনও কাজ করতে বারণ করা হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি বর্ধমান এসিজেএম আদালতে পারবীরহাটা ব্যারাকবস্তি উচ্ছেদের অভিযোগের শুনানির পরে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বর্ধমান শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এই বস্তির বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা প্রায় একশো বছর ধরে ওই বস্তিতে বাস করছেন। সম্প্রতি বস্তি-সহ সংলগ্ন জমির মালিকানা বদল হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন মালিক বস্তি উচ্ছেদ করে বহুতল গড়ার চেষ্টা করছেন। নির্মাণকাজে আসা লোকজন স্থানীয় মহিলাদের অসম্মান করেছেন বলেও অভিযোগ। |
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন এই বস্তি উচ্ছেদের চেষ্টাকে কেন্দ্র করেই গণ্ডগোল বাধে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রচুর লোকজন সকালে বস্তি উচ্ছেদ করতে এলাকায় পৌঁছন। তাঁরা তাঁদের বাধা দেন। খবর পেয়ে ডিএসপি (সদর) অম্লানকুসুম ঘোষ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
বস্তির বাসিন্দা প্রদীপ দে বলেন, “এই জায়গায় আমাদের দীর্ঘদিনের বসবাস। মালিকানা বদলের পরেই এই বস্তি উচ্ছদের চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু মালিকানা বদলের আগে আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনও আলোচনা করা হয়নি।” আর এক বাসিন্দা শুভাশিস সাহা বলেন, “আমাদের কাছে ভাড়ার রসিদ রয়েছে। সশস্ত্র লোক দিয়ে আমাদের তুলে এখানে বহুতল তৈরি করার চেষ্টা আমরা বরদাস্ত করব না। তাই আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।” এ দিন পুলিশ ওই বস্তির মালিককে জানিয়ে দেয়, আদালতের নির্দেশ না নিয়ে এই এলাকায় কোনও কাজ করতে পারবেন না। ডিএসপি (সদর) জানিয়ে দেন, যদি তেমন করার চেষ্টা হয় ও তার প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
ওই বস্তির নতুন মালিক বলে নিজেকে দাবি করে হাবিবুর রহমান বলেন, “আমরা ২০০৫ সালে এই জায়গাটি কিনেছি। কিন্তু আমরা ওই পুরনো ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করতে চাই না। ওঁরা যেমন ভাড়া দিচ্ছেন তেমনই দেবেন। আমরা বস্তির সামনে পড়ে থাকা ফাঁকা জায়গাটি ঘিরে ফেলতে চাই। কারণ, সেখানে রাতে অসামাজিক কাজকর্ম হয়। তাকে কেন্দ্র করেই অশান্তি বাধে।” পুলিশ জানিয়েছে, আদালত ঘটনাটি সম্পর্কে বিএলআরও-কে জায়গার মালিকানা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছে।
|
মঙ্গলবার উদিত সিংহের তোলা ছবি। |